জীবন নিয়ে ভাবনা

রুবি নন্দী | মঙ্গলবার , ২৫ মে, ২০২১ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

একটা সময় যখন কোন বন্ধুর বাবা কিংবা মা মারা যাওয়ার খবর শুনতাম তখন শুধু ভাবতাম, এই সুন্দর ভুবনে মানুষ বাবা-মাকে ছাড়া কিভাবে বাঁচে? কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভুল ভাঙলো যখন খুব কাছে থেকে প্রিয়জনের চলে যাওয়া দেখলাম। সময়ের পরিবর্তনে চারিদিকে এখন স্বজন হারানোর কষ্ট। স্কুলের এক বন্ধু গতবছর বলেছিল, সুদিন এলে সবাই মিলে শৈশবের কাছে যাবো। সুখ-দুঃখ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করবো। জানি সেই সুদিন আর কখনো আসবে না।কারণ সেই বন্ধু কিছুদিন আগে চলে গেছে না ফেরার দেশে। বর্তমানে চরম উৎকন্ঠায় কাটছে সকলের দিনরাত। জীবন সম্পর্কে এখন ধারণা পাল্টে গেছে। ক্ষণস্থায়ী এই জীবন নিয়ে তাহলে কেনো আমাদের এত অহংকার? কেনো এতো বাদ, বিবাদ হানাহানি? অসুস্থ হলে বুঝা যায়, সুস্থতা ঈশ্বরের কত বড় আশীর্বাদ। এখন জীবন মানে মনে হয় কিছু ভালো কর্মের মধ্যে দিয়ে যাওয়া। যতটুকু পারা যায় সাধ্যের মধ্যে। সেদিন দেখলাম আমাদের সেন্ট প্ল্যাসিডস্‌ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্ররা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে কিছু দুস্থ, অসহায় পরিবারের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করছে। আবার প্রাক্তন ছাত্ররা নিজেদের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ করে সংগঠনের মাধ্যমে প্রচার বিমুখ হয়ে এতিমখানায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে বাকি কিছু অর্থ কোন এক ছোট ভাইয়ের বাবার চিকিৎসার জন্য দিচ্ছে। সত্যি গর্বে মনটা ভরে গেলো। ভাবতেই ভালো লাগে আমাদের ইচ্ছে গুলো ওরা এভাবে পূরণ করছে।
আমরা আমাদের আশেপাশে খেয়াল করলে দেখবো,আমাদের কোন স্বজন কিংবা চেনা-জানা অনেকে এই পরিস্থিতিতে সংকটাপন্ন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রকাশে অনিচ্ছুক। আমরা চাইলে এই দুঃসময়ে ভিন্নভাবে তাদের পাশে থাকতে পারি। বর্তমানে আমরা সকলে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। জীবন, জীবিকা আজ ঝুঁকির সম্মুখীন। তবুও আঁধার যতো দীর্ঘ হোক একসময় কেটে গিয়ে আলো ঝলমল করে। তাই এভাবে আমরা সহযোগিতায় পাশাপাশি একে অপরের পরিপূরক হয়ে থাকলে এই কঠিন সময় পার করতে পারবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচলো ভালোবাসা ছড়াই
পরবর্তী নিবন্ধপ্লিজ, আমাদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবুন