জীবনের ভাপাপিঠা আর ২০২৩

ডা. নাহিদা খানম সিমু | মঙ্গলবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

আমার খুব ইচ্ছা হলো ভাপাপিঠা বানাবো, চালের গুড়া, মিঠা সব উপকরণ যোগার করলাম, সেই সাথে মোবাইলে রিসিপি সাথে শুরু করলাম, কী আশ্চর্য পিঠা হলো না, আবার এবং আবার চেষ্টা করলাম হলো না। মনটা দুঃখে ভরে গেলো। আমি পিঠা বানাতে জানি না, আমার প্রজন্মের অনেকে জানে না, তবে তারা দেখেছে তাদের মাখালাফুফুরা খুব সকালে গরম গরম পিঠা বানিয়ে স্কুলকলেজ যাবার আগে জোড় করে খাওয়াচ্ছে। আমার কাছে এখন দোকানের পিঠাই একমাত্র উপায়, আর আমার ছেলেমেয়েদের প্রজন্ম জানবেই না এটা ঘরে নতুন চালে তৈরি করা হয়।

তারা দোকান থেকেই কিনে খাবে। এভাবে আরো কত কিছুই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। নানার বাড়ি বার্ষিক পরীক্ষার পর ভাইবোনদের নাউর, সকালে ঘুম থেকে উঠার জন্য তাগিদ, বাসিমুখে পরীক্ষার আগে পড়ার রীতি, হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য রুলটানা খাতায় লেখা অনুশীলন। গল্প বই পড়ে সময় কাটানো, বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে সারা ঘর খুঁজে মাকে বের করা। নতুন প্রজন্ম এসব কিছুর আসেপাশে নেই। ওদের কাছে পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়, মিকি আয়োজনে মুগ্ধ, অস্তিত্ববিহীন মায়ায় আবদ্ধ, ফিলিং হ্যাপী, অথবা ফিলিং স্যাড এ অনুভূতির প্রকাশে ব্যস্ত। ওরা অনেক জানে, ওদের হাতে ভবিষ্যত কিন্ত হারিয়ে যাবে গত প্রজন্মের অনেককিছু। সেই মানুষগুলোকে কি তারা মিস করবে? যারা সকালে ফজরের নামাজ পড়ে পরিবারের জন্য দোয়া পড়ে গায়ে ফুঁ দেন, ছেলেমেয়েদের অনিয়মে শাসন করেন, আর তাদের ভয়ে বাচ্চারা পালিয়ে যাবার রাস্তা খুঁজে। পড়ার সময়ে টেলিভিশন দেখার অপরাধে, টিভি দেখা বন্ধ করেন। পড়ার টেবিল হয় একমাত্র যাবার জায়গা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৃষ্টিকে ভালোবাসুন, স্রষ্টা আপনাকে ভালোবাসবেন
পরবর্তী নিবন্ধভালো থাকুক রেমিট্যান্স যোদ্ধারা