পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা চার গুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায় চট্টগ্রামে। এবার (২০২০ সালে) এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১৪৩ জনে, যা গতবারের তুলনায় চার গুণেরও বেশি। আর ২০১৮ সালের তুলনায় সাড়ে ৭ গুণ এবং ২০১৭ সালের তুলনায় এ সংখ্যা সাড়ে ৮ গুণেরও বেশি। ২০১৮ ও ২০১৭ সালে যথাক্রমে ১ হাজার ৬১৩ জন ও ১ হাজার ৩৯১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায় চট্টগ্রামে।
শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেএসসি ও এসএসসির ফল বিবেচনায় এবং সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করায় এমন ফল এসেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীকে পাস (অটো পাস) ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে করে চট্টগ্রামের ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাস করেছে। এর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ৫০ হাজার ৩২ জন এবং ছাত্র সংখ্যা ৪৭ হাজার ৯৩৫ জন। শতভাগ পাসের এই ফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ১৪৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৬ হাজার ৩৯৬ জন এবং ছাত্র ৫ হাজার ৭৪৭ জন।
ফলাফলের বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোডের্র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন দেবনাথ বলেন, মূলত সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণেও জিপিএ-৫ বেড়েছে। স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা হলে এমন ফল হয়ত আসত না। সাবজেক্ট ম্যাপিং বলতে জেএসসি ও এসএসসির কিছু কোর সাবজেক্ট বিবেচনায় নিয়ে ফলাফল তৈরির কথা জানান তিনি।
শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, এইচএসসিতে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এসএসসি ও জেএসসির বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের ফল বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও এটা বিবেচনায় নেয়া হয়। তবে সাবজেক্ট ম্যাপিং বিষয়টি একটু জটিল বলে মনে করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ। পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে এ মূল্যায়ন করার কথাও জানান তিনি।
গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা। মোট ১২ হাজার ১৪৩ জন জিপিএ-৫ ধারীর মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৪৩ জনই বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী; যার মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৯৩ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৪ হাজার ৯৫০ জন।
ব্যবসায় শিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ১ হাজার ১২৩ জন এবং ছাত্র ৪৫২ জন। মানবিক বিভাগে সবচেয়ে কম ৫২৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে; যাদের মধ্যে ছাত্রী ৩২৩ জন এবং ছাত্র সংখ্যা ২০২ জন।
২০১৯ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া ২ হাজার ৮৬০ জনের মধ্যে বিজ্ঞানে ২ হাজার ২৫৮ জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ১২৯ জন এবং মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪৭৩ জন।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৬২.১৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। ২০১৮ ও ২০১৭ সালে পাসের এই হার ছিল যথাক্রমে ৬২.৭৩ ও ৬১.০৯ শতাংশ।