জিন্দা লাশ হয়ে বেঁচে আছি, ছেলে হত্যার বিচার চাই

ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য

| বৃহস্পতিবার , ১৪ আগস্ট, ২০২৫ at ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

জুলাইআগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মো. ইয়াকুব। মা রহিমা আক্তার তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, ‘জিন্দা লাশ হয়ে বেঁচে আছি, ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ গতকাল বুধবার বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালএ সাক্ষ্যের জবানবন্দিতে তিনি এ কথা বলেন।

জবানবন্দিতে সন্তানহারা রহিমা আক্তার আরও বলেন, আমার ৩৫ বছরের ছেলে মো. ইয়াকুব নিউ মার্কেটে ডেলিভারিম্যানের কাজ করত। সে প্রায়ই ছাত্র আন্দোলনে যেত। গত বছর ৫ আগস্টও চানখারপুল এলাকার আন্দোলনে গিয়েছিল। ওইদিন সে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়। পেটের এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অপর পাশ দিয়ে ভুড়িসহ বের হয়ে যায়। প্রথমে আমাকে বলছিল না। সবাই সান্ত্বনা দিচ্ছিল। আমি সবাইকে বললাম, তোমরা কাঁদতেছ কেন? আমারে কাঁদতে দাও না কেন? একপর্যায়ে আমার ছেলের লাশ যখন খাটিয়ায় করে আনা হয়, তখন খাটিয়া বেয়ে অনেক রক্ত পড়ছিল। খবর বাসসের।

একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের টিভি মনিটরে মো. ইয়াকুবের রক্তাক্ত অবস্থার ভিডিও দেখানো হলে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। অশ্রুসিক্ত রহিমা সে সময় বলতে থাকেন, আমি একটা মা, জিন্দা লাশ হয়ে বাঁচে আছি। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। হাসিনা, কাউয়া কাদেরসহ যারা গুলির অর্ডার দিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। এই শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটরসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। গত সোমবার এই মামলায় চিফ প্রসিকিউটর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের পর শহীদ আনাসের বাবা সাক্ষ্য দেন।

এরপর মঙ্গলবার সাক্ষ্য দেন রাজধানীর বোরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষিকা আঞ্জু আরা ইয়াসমিন এবং চানখারপুলে পুলিশের গুলিতে শহীদ সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছেলে ভেবেছিলেন মেয়ের বাসায় বাবা, খবর এলো ক্ষেতে পড়ে আছে লাশ
পরবর্তী নিবন্ধপুলিশের পোশাক পরা লোকদের হিন্দিতে কথা বলতে শুনেছেন সাক্ষী