ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর বান্ধবীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান গতকাল শনিবার বলেন, বৃহস্পতিবার কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলে জিতু ও তার বান্ধবীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী জিতুকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকেও সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে তাকেও স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে। খবর বিডিনিউজের।
গত ২৫ জুন দুপুরে আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্কুলমাঠে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। দুদিন পর মারা যান উৎপল। বুধবার জিতুকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। জিতু ওই স্কুলের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
উৎপল হত্যাকাণ্ডে টানা পাঁচ দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর শনিবার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিক শাখার পাঠদান শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এরপর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় হাইস্কুল ও কলেজ শাখার পাঠদান।
অধ্যক্ষ বলেন, স্বাভাবিক পাঠদান শুরু করেছি আমরা। তবে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি খুবই কম। সত্যিকার অর্থে এখনও অনেকের আতঙ্ক কাটেনি। তার ওপর ঈদ চলে আসায় অনেক শিক্ষার্থী গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ায় উপস্থিতি কম। রোববার থেকে প্রতিষ্ঠানের ঈদের ছুটি শুরু হবে। ছুটি থাকবে ১৬ জুলাই পর্যন্ত। এদিকে উৎপলকে ছাড়া পাঠদানে মনোযোগী হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মীরা। বারবার উৎপলের স্মৃতি তাদের নাড়া দিচ্ছে। কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তাদের।
বিজ্ঞান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ওনার অনুপস্থিতিটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে উনার জন্য। আমি যখন এখানে জয়েন করি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তখন উনি আমার দুই বছরের সিনিয়র। এখানে আসার পরে আমরা একসঙ্গে রুম শেয়ার করেছি। কষ্ট হলেও শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে পাঠদান শুরু করতে হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, উৎপল স্যারের অনুপস্থিতিতেই আমাদের ক্লাস শুরু করতে হচ্ছে। কারণ বাচ্চাদের কথাটাও চিন্তা করতে হবে। ওদের ভবিষ্যৎ কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি উৎপলের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সোচ্চার থাকবেন বলেও জানান এই শিক্ষক।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল কলেজটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে আশুলিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছিলেন।
