জাহাজের ভেতরেই ছিল দুটি মরদেহ

কর্ণফুলীতে ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার পাওয়া গেল ৭ লাশ, অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী নদীতে ডুবে যাওয়া এফভি মাগফেরাত জাহাজটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল জাহাজের ভিতর থেকে আরো ২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজটির ক্যাপ্টেনসহ ৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল এসব মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে। জাহাজটির আর কোনো নাবিক নিখোঁজ না থাকায় গতকাল উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ জানায়, গত ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদরঘাট ও কর্ণফুলী ঘাটের মাঝামাঝি স্থানে এফভি মাগফেরাত নামের ফিশিং ট্রলারটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। জাহাজটিকে ডকিং করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় রশি পেঁচিয়ে কর্ণফুলী নদীতে ডুবে যায়।
খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের ঘাঁটি থেকে ৫ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল অভিযান শুরু করে। কোস্ট গার্ডকে জানানো হয়, জাহাজটির নাবিক ও একজন অতিথি মিলে ২০ জনের মধ্যে ১৪ জন সাঁতরে কূলে উঠলেও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের ডুবুরি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তারা ডকইয়ার্ডের একজন কর্মচারী ও ৪ জন নাবিকের লাশ উদ্ধার করলেও ১ জন নাবিক ও ১ জন অতিথির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দুর্ঘটনায় জাহাজটি উল্টে যাওয়ায় ভেতরে কোনো লাশ আটকা পড়েছে কিনা দেখা সম্ভব হচ্ছিল না।
শুক্রবার জাহাজটিকে টেনে কর্ণফুলী সেতুর পাশে মন্দিরঘাট এলাকায় নিয়ে সোজা করে রাখা হয়। কিন্তু পলি জমায় জাহাজে ঢোকা সম্ভব হচ্ছিল না। গতকাল সকালে মেরিন সেলভেজ বার্র্জ অ্যান্ড জেনুইন এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ফিশারিঘাটে জাহাজটিকে সেলভেজ করানো হয়। ওই সময় কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল জাহাজটির ইঞ্জিন রুম থেকে ১টি ও ক্রু কেবিন থেকে ১টি লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেন লে. কমান্ডার বি এম তানজিমুল ইসলাম। পরে লাশ ২টি নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তারা হলেন নাবিক মোহাম্মদ রাকিবের পিতা মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব। তিনি ভোলা থেকে সন্তানকে দেখতে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। রাতে খাওয়ার পর সন্তান রাকিবের কেবিনে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। দুর্ঘটনার পর রাকিব সাঁতরে কূলে উঠলেও পিতা কেবিনে আটকা পড়ে প্রাণ হারান। অপরজন হচ্ছেন হাটহাজারীর ফতেয়াবাদের যাদু চৌধুরীর পুত্র প্রদীপ চৌধুরী। তিনি জাহাজটির ইঞ্জিনরুমে কর্মরত ছিলেন।
এ নিয়ে জাহাজটির ৫ নাবিক, একজন অতিথি ও ডকইয়ার্ডের একজন কর্মচারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। আর কেউ নিখোঁজ নেই বলে জাহাজটির মালিকপক্ষ নিশ্চিত করায় কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ বলেন, কেউ নিখোঁজ নেই। ৭ জনের লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু আজ
পরবর্তী নিবন্ধশাহবাগে বিক্ষোভ হুম্মামের বিচার দাবি