জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তুলতে দুইদিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউ’র মোহনা বলরুমে এই সম্মেলন শুরু হয়।
‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটি ফর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথম দিন পাঁচটি বিষয়ে রাউন্ড টেবিল সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা (আইএমও), নরওয়ে দূতাবাস এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
শুরুতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খাত। বাংলাদেশের জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকিমুক্ত করতে অর্থায়নের জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন বলেন, বাংলাদেশের জাহাজভাঙা শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। নরওয়ে এ শিল্পের উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করছে। সরকারের সহযোগিতা দরকার। আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। নরওয়ের জাহাজ মালিকরা আগ্রহী হচ্ছেন বাংলাদেশে শিপ রিসাইক্লিং করতে।
রাউন্ড টেবিল সেশনে অংশ নিয়ে বিএসবিআরএ’র সহ–সভাপতি ও পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প খাত থেকে প্রতি বছর আয় হয় প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন ডলার এবং সরকারের রাজস্ব আয় হয় প্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। এ শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষ কাজ করেন, পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ফলে দেশের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নে এ শিল্প ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে।
সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত চারটি ইয়ার্ড যথাক্রমে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ, কবির স্টিল, এস এন করপোরেশন (ইউনিট–২) এবং কে আর শিপ রিসাইকিং ইয়ার্ড কমপ্লিয়েন্ট (গ্রিন) ইয়ার্ডে উন্নীত হয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে বাকি ইয়ার্ড মালিকগণের পক্ষে গ্রিন ইয়ার্ডে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না। এটাই এখন জাহাজভাঙা শিল্পের প্রধান সমস্যা। এ সমস্যা নিরসনের জন্য সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকার, আইএমও–সহ উন্নয়ন সহযোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সম্মেলনে রাউন্ড টেবিল সেশনে আরও অংশ নেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, আইএমও’র কর্মকর্তা জন আলনসো, আইআইইউসির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম আজিজ, জাহাজভাঙা শিল্পের পরামর্শক ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, বিআইএমসিও’র হেড অব মেরিন এনভাইরনমেন্ট অ্যারন সেরেনসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিন, ক্লাসএনকে’র গ্রিন সার্টিফিকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি তাকেশি নারুসে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, এসআরএস শিপব্রেকার্সের সাদমান শাহরিয়ার রাফসান, সিমনি শিপইয়ার্ডের উপ–ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারতাজ ইমরান, আইএমও’র ন্যাশনাল প্রজেক্ট ম্যানেজার জসিম উদ্দিন বাদল, নরওয়ে দূতাবাসের সিনিয়র অ্যাডভাইজার মোরশেদ আহমেদ প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।