জাল সনদে দলিল লেখক, জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় এসএসসি পাশের সনদ জালজালিয়াতি করে দলিল লেখক হিসেবে স্বীকৃতি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে মোহাম্মদ সোলেমান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি মুহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন নামে এক ব্যক্তি এই অভিযোগটি করেন। অভিযোগটি সাবরেজিস্ট্রারের কাছে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। শুধু সোলেমানই নন, এরকম ১২ জন দলিল লিখক সনদ জালিয়াতি করেছেন গোপন সুত্রে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ভুক্তভোগী ও দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের পূর্ব বেতাগী গ্রামের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে মোহাম্মদ সোলেমান রাঙ্গুনিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অধীন দলিল লেখক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল। দলিল লেখকের যোগ্যতা হিসেবে এসএসসি হওয়ার কথা থাকলেও এসএসসি পাশ না করে সোলেমান জালিয়াতির মাধ্যমে এসএসসি সনদ তৈরি করে দলিল লেখকের লাইসেন্স নেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জালজালিয়াতির মাধ্যমে জাল ওয়ারিশ সনদ, জায়গা জমির দলিল ও খতিয়ানসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরি করে। এসব ডকুমেন্ট সাব্ রেজিস্ট্রারের কাছে উপস্থাপন করে সকলের অগোচরে বিভিন্ন লোকের জায়গা জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। পোমরা ইউনিয়নের সমেরাজ খাতুন নামে এক নারীর ওয়ারিশ সনদ ইস্যু না হওয়া সত্ত্বেও জাল ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে ৪ শতক জমি সোলেমান নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এই ঘটনায় আদালতে মামলা করলে মামলার তদন্তের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ভুক্তভোগী লোকজন অভিযুক্ত ব্যক্তির সনদ বাতিল চেয়ে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানান।

অভিযোগকারী ইসমাইল হোসাইন বলেন, ‘সাব রেজিস্ট্রার অভিযোগটি পেয়ে নোটিশ জারি করলে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে উভয় পক্ষ উপস্থিত হন। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দীর্ঘক্ষণ শুনানি হয়। এতে সোলেমান এসএসসি পাশের পাশের মূল সনদ দেখাতে পারেনি এবং ২০০৮ সালে দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নেওয়ার সময় যে সনদটি দাখিল করেছে তা অন্যজনের নামে ইস্যুকৃত যা তৎক্ষনাৎ এসএসসি অনলাইন রেজাল্ট চেকিং সিস্টেমে প্রতীয়মান হয়।’

তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সোলেমান জোরপূর্বক ইসমাঈলগং এর রায়তি ও খরিদা কিছু অংশ জায়গা জবর দখল করে নেয় এবং বাকিটুকু জবরদখল করে আত্মসাৎ করার পায়তারা করছে। এসবের প্রতিবাদ করায় তারা নানা মামলা, হামলা ও হুমকির শিকার হচ্ছেন বলে তিনি জানান।

অভিযুক্ত সোলেমান বলেন, ‘আমি যখন ২০০৮ সালে লাইসেন্স নেয়, তখন সনদের প্রয়োজন হয়নি এবং সেটা দাখিলও করিনি। তাদের অভিযোগের বিষয়ে সাব রেজিস্টার মহোদয় শুনানি করেছেন। আমি জাল জালিয়াতি করছি কিনা, সেই ব্যাপারে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করেছি।

এই ব্যাপারে গতকাল রোববার দুপুরে রাঙ্গুনিয়া সাব-রেজিস্টার আজমল হোসেন বলেন, মোহাম্মদ সোলেমানের বিরুদ্ধে জাল সনদে দলিল লেখক হওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে চুয়েটে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ