জার্মানির তৈরি জি–৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলিসহ আরসার গান কমান্ডার জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়ার ১০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র্যাব–১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার সদস্যদের কাছে মিলেছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জার্মানির ব্যবহৃত জি–৩ রাইফেল। সে দেশের আইনশৃক্সখলা বাহিনী এই রাইফেল ব্যবহার করে। মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশের কাছ থেকে মারণাস্ত্র লুট করা হয়। যা আরসা সদস্যদের হাত ধরে বাংলাদেশে পৌঁছে। এখানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে ৫–৬ লাখ টাকায় জার্মানির তৈরি রাইফেলটি বিক্রি করছে আরসা। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিলিং মিশনে এই রাইফেল ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সমপ্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পায় যে, কক্সবাজারের উখিয়ার ১০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার কতিপয় সদস্য নাশকতার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে হতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র নিয়ে এসেছে। এ সূত্র ধরে উখিয়ার ১০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালায়নের চেষ্টাকালে আরসা সন্ত্রাসী মো. জাকারিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। সে ক্যাম্প–১০, ব্লক–এফ/১৭ এর মৃত আলী জোহরের ছেলে। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে পালংখালী ইউনিয়নের ঘাটি বিল থেকে জার্মানির তৈরি জি–৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার জাকারিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে র্যাব জানায়, সে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক এবং সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো। ২০২৩ সালের শেষের দিকে সে রোহিঙ্গা ক্যাম্প–১০ এর ব্লক–এফ/১৭ এর ব্লক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পায়। মিয়ানমারে সৃষ্ট সংঘর্ষে লুন্ঠিত অস্ত্র আরসা সন্ত্রাসীরা অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করতো এবং বিভিন্ন মাধ্যম বাংলাদেশে নিয়ে আসতো। পরবর্তীতে এই অস্ত্র গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া তার নিকট গচ্ছিত রাখতো। অতঃপর ক্যাম্প–১০ এর আরসা কমান্ডারের নিকট হস্তান্তর করা হতো এবং ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে এ সকল অস্ত্র ব্যবহার করতো। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া সে দুইবার কারাভোগ করে।
আরসার এই শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।