সৌদি আরবের অপ্রত্যাশিত জয়ের পর আরও একটা অঘটনের আশায় ছিলেন এশিয়ার ফুটবলপ্রেমীরা। তাদের আশাহত করল না জাপান। গতকাল বুধবার দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল জাপান। এমনিতেই গত বিশ্বকাপের পর থেকে বেশ নড়বড়ে অবস্থায় জার্মানরা। তারপরও নতুন কোচের অধীনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল সব সময়ের ফেভারিট জার্মানি। আর নিজেদের ফিরে পাওয়ার সে মিশনে প্রথমেই জার্মানরা পেয়েছিল অপেক্ষাকৃত কম শক্তির দল এশিয়ার প্রতিনিধি জাপানকে। যে দলটির বিপক্ষে আগের দুই মোকাবেলায় একটি ম্যাচ জিতেছিল জার্মানি, অন্যটি ড্র। তবে এবারে বিশ্বকাপ মিশনে সেই জাপানই বড় ধাক্কাটা দিল জার্মানিকে।
প্রথম ম্যাচেই জার্মানির রক্ষণ ভাগের দুর্বলতা বার বার দেখিয়ে দিল জাপান। সামনে জার্মানির মতো শক্তি থাকলেও গুটিয়ে থাকেননি জাপানের ফুটবলাররা। শুরুটা আক্রমণাত্মক মেজাজেই করেন তারা। বরং জার্মানিই কিছুটা ধীরে শুরু করে। হতে পারে প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কিছুটা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ম্যানুয়েল ন্যয়াররা। জাপান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বুঝে স্বাভাবিক খেলা শুরু করে জার্মানি। ধীরে ধীরে মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেন কিমিচ জোসুয়া, থমাস মুলাররা। ক্রমশ জার্মান আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়তে থাকে জাপানের বক্সে। খেলার ৭৫ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল জার্মানরা। কিন্তু পরের ৮ মিনিটে সবকিছু শেষ করে দিল জাপান।
ম্যাচের কিক অফের পর থেকেই বলতে গেলে জাপানকে চেপে ধরে চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ৮০ ভাগের ওপরে বলের দখল রেখে একের পর এক আক্রমণ। ৩৩ মিনিটে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জার্মানি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন গুন্ডোগান। এই গোলের জন্য দায়ী জাপানের গোলরক্ষক গোন্ডা। তিনিই বঙের মধ্যে ফাউল করেন জার্মানির এক ফুটবলারকে। প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ পেয়েও গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি জার্মানি। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা অব্যাহত রেখেছিল জার্মানি। এদিকে ধীরে ধীরে সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করে এশিয়ার দলটি। ম্যাচে সমতা ফেরানোর চেষ্টা করে জাপান। খেলার ৭৫ মিনিটে আসে সেই সুযোগ।
দারুণ এক গোলে খেলায় সমতা ফেরান রিৎসু দোয়ান। সময় যতই গড়াচ্ছিল ততই জার্মানদের আক্রমণের ধার বাড়ছিল, চাইছিল ম্যাচটা জেতার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উল্টো তাদের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন তাকুমা আসানো। বামপ্রান্তে নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা পাস বাড়ান ইথাকুনার। সে পাস ধরে এক জার্মান ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুরুহ এক শটে বল জালে পাঠান। ২-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে মাতে জাপান। শেষ পর্যন্ত সে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে জাপান। আর এবারের বিশ্বকাপে জন্ম দিল আরো একটি অঘটন।