চট্টগ্রামে ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ। এক সময়ে খেলোয়াড় তৈরির কারখানা আউটার স্টেডিয়াম এখন খেলাধুলার অনুপযুক্ত। রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠ বছরে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকে মেলা নিয়ে। এছাড়া অন্য যে সব মাঠ গুলো রয়েছে সেগুলোও এখন আর খেলাধুলার উপযোগী নেই। তার ওপর চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম নিয়ে চলছে রশি টানাটানি। এমতাবস্থায় চট্টগ্রামে একাধিক খেলার মাঠ তৈরির বা উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি জাম্বুরি মাঠ যেটির এক অংশ শিশু পার্ক আর আরেক অংশে করা হয়েছে পার্ক। তবে শিশু পার্কের ভেতর রয়েছে একটি বড় মাঠ। যে মাঠটিকে খেলাধুলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে চান সিটি মেয়র।
আর সে জন্য ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ এর সাথে একটি চুক্তিও সেরে ফেলেছেন তিনি। সে চুক্তি মোতাবেক প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মাঠটিকে খেলাধুলার উপযোগী করে দেবে ইউসিবিএল। এরই মধ্যে দু পক্ষের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হলেও মাঠের ডিজাইন কি হবে, খেলার মাঠ ছাড়াও কি কি থাকবে সে সব চূড়ান্ত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে খেলার মাঠ ছাড়াও ওয়াকওয়ে এবং সুন্দর পরিবেশে বসে খেলা দেখার বা সময় কাটানোর ব্যবস্থা থাকবে। জাম্বুরি মাঠ ছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের নিজেদের যে মাঠটি রয়েছে কর্ণফুলী সেতুর পাশে সেটিও একটি আধুনিক স্টেডিয়ামে পরিণত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সিটি কর্পোরেশন। এই মাঠটিকে স্টেডিয়ামে পরিণত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফরটিস গ্রুপকে। এই গ্রুপটির ঢাকায় দারুণ সুন্দর একটি মাঠ রয়েছে। তাদের ক্লাব এফসি ফরটিস খেলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। ক্লাবটির কর্ণধার শাহীন, যিনি আবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্যও। তিনি সিটি কর্পোরেশনের বাকলিয়া স্টেডিয়ামটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়ামে পরিণত করতে সহযোগিতা করছে। দীর্ঘ দিন ধরে বাকলিয়া স্টেডিয়ামটি অবহেলিতভাবে পড়ে আছে। এরই মধ্যে অনেক মেয়র এসেছেন আর গেছেন। কিন্তু কেউই স্টেডিয়ামটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়ামে পরিণত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। অথচ নদীর পাড়ে দারুন দৃষ্টিনন্দন একটি স্টেডিয়াম হতে পারে সেটি। অবশেষে বর্তমান সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এই স্টেডিয়ামটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়ামে রূপদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
গতকাল চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে মেয়র কাপ অনূর্ধ্ব–১৮ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করতে গিয়ে সিটি মেয়র বলেন, হালিশহর বিডিআর মাঠসহ চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠিত মাঠ গুলোকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দিব। যাতে সেই উন্মুক্ত মাঠে সবাই খেলাধুলা করতে পারে। আমি জানি মাঠই আমাদের সম্পদ। তরুণ সমাজকে যদি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয় তাহলে মাঠের কোনো বিকল্প নেই। আমরা তাদেরকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে এই মাঠেই সংগ্রাম করব।
সিটি মেয়র বলেন, আমি আজকে স্মরণ করতে চাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তার সহধর্মিনী সাবেক প্রধান মন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যারা খেলাধুলার জন্য অনেক ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে স্মরণ করছি তাদের পুত্র আরাফাত রহমান কোকোকে। তিনি সাগরিকা স্টেডিয়ামকে অত্যাধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। তাছাড়া বগুড়া, খুলনা ও মিরপুর স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটের জন্য গড়ে তুলেছিলেন। চট্টগ্রামে তেমনি একাধিক মাঠ সৃষ্টি করতে চান সিটি মেয়র। যাতে খেলাধুলার আর কোন সমস্য না হয়।