প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ ছাড়ার ঘোষণার দেওয়ার পর সৈয়দ জামিল আহমেদ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপসহ সংস্কৃতি উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। জামিল আহমেদের অনেকগুলা কথা পুরো সত্য নয়, অনেকগুলা কথা ডাহা মিথ্যা এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারাজনিত হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার দুপুরে ফারুকী তার ফেইসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন, যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই। খবর বিডিনিউজের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্য উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। সে অনুষ্ঠানেই শিল্পকলার সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
ফারুকী তার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম যায়যায়দিনের এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাগাজিন মৌচাকে ঢিলের জন্য। এর পরেও বাংলা–ইংরেজি অনেক কাগজে লিখেছি। এখনও আমি তাঁকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কয়দিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে।
‘ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুইরকম আর্ট’ বলে মনে করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা। ‘আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানোর কাজটি করার জন্য ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি লাগে’ বলেও মন্তব্য করেন ফারুকী। উপদেষ্টার ভাষ্য, কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেওয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনো একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেওয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।
জামিল আহমেদের পদত্যাগের বিষয়ে ফারুকী বলেন, আমি জামিল ভাইয়ের নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না, কারণ তাতে আমাকে এমন কিছু রেফারেন্স টানতে হবে যেটা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হবে। আমি চাচ্ছিলাম না, কারণ আমি তাঁকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফর রেকর্ডস আমাকে আসলে এগুলো বলতেই হবে। আজকে আমাদের অনেকগুলা কাজ আছে। এটা শেষ করে সময় পেলে লিখবো।
জামিল আহমেদের মঙ্গল কামনা করে ফারুকী বলেন, উনার সৃজনশীল কাজে যেকোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারলে মন্ত্রণালয় ধন্য হবে। আর আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার পরও তাঁর কোনো সাহায্যে আসলে আনন্দিত হবো, যদিও আমাদের দুইজনের কাজের ক্ষেত্র আলাদা।