দলের এক সভায় ২০ দলীয় জোটে না থাকা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের যে বক্তব্য এসেছে, তা নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই বিএনপির। গত কয়েকদিন ধরে জামায়াত আমিরের ওই বক্তব্যের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাসলেও তা নিয়ে বিএনপির কোনো নেতা মুখ খুলছিলেন না। গতকাল নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এনিয়ে ছেঁকে ধরেন সাংবাদিকরা। তিনি তখন বলেন, এখন বলে লাভ নেই। আপনারা (সাংবাদিকরা) কী বলবেন, সেটাও আমি জানি। আমি উত্তর দেব না। খবর বিডিনিউজের।
এক পর্যায়ে একজন সাংবাদিক বলেন, এটাতে আমার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব তখন বলেন, আপনার গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্মান রেখেই বলছি, আমারও গণতান্ত্রিক অধিকার আছে সেটার উত্তর না দেওয়ার। এরপর ‘আপনাদের ধন্যবাদ’ বলেই এ প্রসঙ্গটি চাপা দেন ফখরুল।
১৯৯৯ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে জোটে আছে জামায়াতে ইসলামী। প্রথমে জোটটি ছিল চারদলীয় জোট, এক যুগ পরে ২০ দলীয় জোট হলে সেখানেও জামায়াত ছিল। প্রায় এক দশক আগে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাই দণ্ডিত হলে এই দলটির সঙ্গ ছাড়ার জন্য বিএনপির উপর চাপ বাড়তে থাকে। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি ২০ দলকে দৃশ্যত নিষ্ক্রিয় রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলে। তবে ইসিতে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ওই ভোটের পর বিএনপি আর ২০ দলকে সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জোটে জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে থাকলেও দলটির সঙ্গে প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচিও করেনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষে ২০ দলীয় জোটভুক্ত বিভিন্ন দলসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে সংলাপ করলেও জামায়াতকে ডাকেনি।
এই প্রেক্ষাপটে জামায়াতের মজলিশে শূরার এক ভার্চুয়াল সভায় দলটির আমির শফিকুরের বক্তব্যের যে ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, তাতে তাকে বলতে শোনা যায়, ২০ দলীয় জোট আর কার্যকর নেই। বিএনপি এই জোট কার্যকর করতে চায় না। বছরের পর বছর ধরে এই ধরনের অকার্যকর জোট চলতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি। এর সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না। এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। গত ১৪ অগাস্ট জামায়াতের মজলিশে শূরার ওই সভা হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ পর গত রোববার তার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে শোনা আমিরের বক্তব্য নিয়ে জামায়াতের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।