জামায়াতে ইসলামীর আট দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) যোগ দেওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে শফিকুর রহমান এ অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের আট দলের সঙ্গে দুটি দল যুক্ত হয়েছে–এনসিপি ও এলডিপি। এলডিপির অলি আহমেদ উপস্থিত আছেন, আর এনসিপির নাহিদ ইসলাম এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে মিটিং করেছেন; আমাদের জোটে যুক্ত হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট বাঁধার গুঞ্জনের মধ্যে এদিন জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা আট দল। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও এলডিপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এলডিপি ও এনসিপির সঙ্গে নির্বাচনি জোট করার বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, একটু আগে আমাদের সঙ্গে তাদের বৈঠকটা সমাপ্ত হয়েছে। তারা এই বৈঠকে আসার সময়–সুযোগটা পাননি। তাছাড়া দলীয় পরিসরে তারা একটা মিটিং করে আজ রাতেই এখানে সম্পৃক্ততার ব্যাপারটা আপনাদেরকে পরিষ্কার জানিয়ে দেবেন। তাদের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সরাসরি কথা বলেছেন। তাদের সবার সঙ্গে আমরা উপস্থিত ছিলাম এবং তিনি তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের জানিয়েছেন।
কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে ৩০টি আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা কিসের ভিত্তিতে একত্রিত হয়েছি? আমাদের লক্ষ্যের কথা আমরা বলেছি। এটা আমাদের একটি মজবুত নির্বাচনি জোট। দেশের ৩০০ আসনে আমরা বসে নিজেদের মাঝে আলাপ–আলোচনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন আসন আমাদের মধ্যে আমরা নির্ধারণ করেছি। যেহেতু দুইটা দল একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। আরো অনেক আগ্রহী ছিলেন। বাট এই প্রক্রিয়ায় এই মুহূর্তে এখানে সম্পৃক্ত করা আমাদের জন্য খুবই দুরূহ হয়ে গেছে। অনেকের আগ্রহ থাকার পরেও আমরা সেভাবে তাদের সম্পৃক্ত করতে পারছি না। আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। কিন্তু জাতীয় জীবনে আমরা তাদের সাথে কাজ করব। এই জাতিকে গড়ার জন্য। আমাদের আসন সমঝোতা ‘অলমোস্ট কমপ্লিট’। সামান্য একটু বিষয়, যেগুলা রয়েছে, আমরা আশা করছি, এইটা নমিনেশন ফাইল করার পরপরই আমরা সেটাও আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতে সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা হয়েছে, তার কোনো হেরফের যেন না হয়। এই তারিখেই নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হোক। আপনাদের সহযোগিতাও এই ব্যাপারে খুবই প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের যে করণীয়, নির্বাচন কমিশন ও সরকার, সেই দায়িত্ব তারা পালন করবেন।
এখনো সবার জন্য সমতল মাঠ তৈরি হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই মাঠ তৈরির কাজটা হচ্ছে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের। তারা যে–কোনো ধরনের লোভ–লালসা, ভয়ভীতি ও কারো প্রতি আনুকল্যের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করবেন। সাংবিধানিক নৈতিক দায়িত্ব; এটা আমরা এবং জাতি তাদের কাছে প্রত্যাশা করি। এর কোনো ব্যতিক্রম এই জাতি মানবে না।
নির্বাচনি জোট হলেও নানা দাবিতে আন্দোলন–সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, জোট বলুন আর না বলুন, আমরা কিন্তু জোটের চাইতেও আরো মজবুত। আরো ঐক্যবদ্ধ।












