নগরের জামালখান এস এস খালেদ রোডে ‘ইউরেকা’ নামে একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলার একটি ফ্ল্যাটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া অগ্নি নির্বাপনে ব্যবহৃত পানি পড়ে কয়েকটি ফ্ল্যাটের মালামালেরও ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
ভবনটির প্রতি ফ্লোরে তিনটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। আগুন লাগার খবরে ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তারা দ্রুত নিচে নেমে আসে। কয়েকটি ফ্ল্যাটে বেশ কয়েকজন অসুস্থ রোগী ছিলেন। তাদের নিয়ে বেকায়দায় পড়েন স্বজনরা। পরে এদের অনেককে প্রতিবেশীদের এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় এস এস খালেদ রোডে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে যানজট লেগে যায়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইউরেকা ভবনের ‘এফ–৭’ ফ্ল্যাটে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে আগুন লাগে। তিনটি স্টেশনের ৭টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ১২টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ১টা ৫০ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপন হয়। বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে এ আগুন লাগে।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস আগ্রাবাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর জানায়, যে ফ্ল্যাটে আগুন লাগে সেটার মালিক শাহানা আকতার। অগ্নিকাণ্ডে তার চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল দুপুরে এস এস খালেদ রোডে উপস্থিত হয়ে ভবনটির সপ্তম তলার জানালা দিয়ে আগুন দেখা গেছে। এসময় উপরের দুটি ফ্লোর থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছিল। এসময় ভবনের নিচ তলায় বিভিন্ন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে কয়েকজন বয়স্ক ও অসুস্থ ছিলেন। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক নারী সদস্য ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, কারেন্টের তারে আগুন লেগে যায়। আমরা নিভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু যখন দেখলাম বেড়ে যাচ্ছে তখন সবাইকে নিয়ে নিচে নেমে আসি। ভবনের আরেক বাসিন্দা বলেন, কম্পিউটার চালানোর সময় বৈদ্যুতিক প্লাগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
এসময় ঊমা মুহরী নামে সত্তোর্ধ্ব এক নারীর চোখেমুখে আতংকের ছাপ দেখা গেছে। কথা বলার সময় তিনি কাঁপছিলেন। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ। ভালোমতে হাঁটতে পারি না। প্রতিবেশী তিন–চারজন কোলে করে নামিয়ে আনে। বেশি ভয় পেয়েছি। এসময় তিনি নিরাপদে আছেন, এ বার্তা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত তার সন্তানদের জানানোর জন্য বলছিলেন প্রতিবেশীদের।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ফ্ল্যাটটিতে উপস্থিত হয়ে দেখা গেছে, যে কক্ষে আগুন লাগে সেখানের সব মলামাল সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দেয়ালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যান্য কক্ষে অগ্নি নির্বাপনে ব্যবহৃত পানিতে নষ্ট হয়েছে বিভিন্ন মালামাল।












