জাপানকে বদলে দিতে পারে আবে হত্যাকাণ্ড

| শনিবার , ৯ জুলাই, ২০২২ at ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়তে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন: জাপানে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। জাপানে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা খুব বিরল এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের কথা খুব একটা শোনা যায় না। মূলত দেশটির কঠোর অস্ত্র আইন থাকার পরও এমন হত্যাকাণ্ড অনেককেই হতবাক করেছে। জাপানে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা নেতা আবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী না থাকলেও জাপানে এখনও তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গত তিন দশকের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নেতাও। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক মন্তব্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাপানের মানুষ সহিংস অপরাধের কথা প্রায় চিন্তাই করেন না। যদিও দেশটিতে ইয়াকুজার মতো কুখ্যাত সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র রয়েছে। কিন্তু এদের সংস্পর্শে আসতে চায় না খুব বেশি সংখ্যক মানুষ। এমনকি এই চক্রও আগ্নেয়াস্ত্র থেকে দূরে রাখে নিজেদের। কারণ অবৈধ অস্ত্র বহনে কঠোর সাজা ভোগ করতে হয়।
জাপানে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা পাওয়া খুব কঠিন। আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা পেতে হলে কোনও অপরাধ করার তথ্য থাকা যাবে না, বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিতে হয়, মানসিক পরীক্ষা এবং নিবিড় তথ্য যাচাই শেষে কেবল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া যায়। ফলে দেশটিতে বন্দুক সহিংসতা কার্যত নেই। প্রতি বছর ১০টিরও কম বন্দুক সংশ্লিষ্ট মৃত্যু হয় জাপানে। ২০১৭ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি। জাপানের সংবাদমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, আবের সন্দেহভাজন হত্যাকারীর বয়স ৪১ বছর। তিনি দেশটির নৌবাহিনীতে তিন বছর কর্মরত ছিলেন। নিবিড় পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, আবে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বন্দুকটি আগ্রহ উদ্দীপক। হামলার পর হামলাকারীর মাটিতে পড়ে যাওয়া একটি ছবি প্রকাশ পেয়েছে। এতে একটি অস্ত্রও দেখা গেছে। দৃশ্যত মনে হয়েছে এটি বাড়িতে বানানো। দুটি স্টিলের পাইপ টেপ দিয়ে আটকানো এবং হাতে তৈরি ট্রিগার যুক্ত। মনে হয়েছে, ইন্টারনেট থেকে ধারণা নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। ফলে এটা ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক হামলা নাকি বিখ্যাত মানুষকে গুলি করে বিখ্যাত হতে চাওয়া কারও কোনও আবেগী কাজ তা নিয়ে সন্দেহ থেকে গেছে। জাপানে রাজনৈতিক গুপ্তহত্যার ইতিহাস একেবারে নেই-এমনটি নয়। সবচেয়ে বিখ্যাত হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৯৬০ সালে। ওই বছর জাপানের সোশালিস্ট পার্টির নেতা ইনেজিরো আসানুমার পেটে সামুরাই তলোয়ার চালিয়ে দেয় এক ডানপন্থী উগ্রবাদী। এখনও জাপানে ডানপন্থী উগ্রবাদী রয়েছে। তবে ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী আবে তাদের লক্ষ্যবস্তু হবেন এটা অনেকেই ধারণা করতে পারছেন না। গত কয়েক বছরে জাপানে আরেক ধরনের অপরাধ সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠতে দেখা গেছে। শান্ত, একাকি পুরুষকে কারও বিরুদ্ধে কিংবা কোনও কিছুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাপানে বন্দুক হামলা বিরল, আইনও অত্যন্ত কঠোর
পরবর্তী নিবন্ধলম্বা কান নিয়ে পাকিস্তানের ছাগলছানা এখন তারকা, প্রত্যাশা গিনেস বুক