জানুয়ারিতে জেলা পরিষদ নির্বাচন

চট্টগ্রামে চেয়ারম্যান পদে ৪ জনের আগ্রহ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ

আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সবকটি জেলা পরিষদের নির্বাচন। গতকাল বুধবার কমিশন সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা এ তথ্য জানান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসেম্বরের মধ্যে সব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। জানুয়ারির দিকে জেলা পরিষদ নির্বাচন করা হবে। কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে গতকালই আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। তবে আপনারা জানেন, ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় পরিষদের জনপ্রতিনিধিরাই জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। ফলে এই ভোটগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে গেলে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে। যে কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জানুয়ারি মাসে এই ভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর। সেই নির্বাচনে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এম এ সালাম ছাড়া আর কোন প্রার্থী না থাকায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এম এ সালামকে ১১ ডিসেম্বর বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান ছাড়া ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও ৫ জন মহিলা সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এবার চট্টগ্রামে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অনেকের আগ্রহ বাড়ছে। এখনো পর্যন্ত ৪ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ সালাম ছাড়াও উত্তর জেলায় মিরসরাইয়ে একজন, দক্ষিণ জেলার মধ্যে পটিয়ায় একজন এবং সাতকানিয়ায় একজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে এখনই নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ করায় নাম প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, এম এ সালাম ২০১১ সালে সরকার কর্তৃক প্রশাসকও নিয়োগ হয়েছিলেন। প্রথমবার প্রশাসক হিসেবে ৫ বছর এবং পরবর্তীতে ২০১৬ সালের পর থেকে আরো ৫ বছর দায়িত্ব পালন করছেন।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার সব পৌরসভা ও ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৪১টি ওয়ার্ডকে নিয়ে ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং পাঁচটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে। এসব ওয়ার্ডের প্রতিটি থেকে একটি করে মোট ২০টি সদস্য পদ রয়েছে। নির্বাচনে ভোট দিবেন চট্টগ্রাম জেলার সবগুলো পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের হিসেব মতে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ২ হাজার ৩৮৫ জন। মেয়াদোত্তীর্ণ এবং নির্বাচন স্থগিত হয়েছে এমন পৌরসভা ও ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও ৫ মহিলা সদস্য পদে যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন তারা হলেন- ২ নম্বর (সীতাকুন্ড-মিরসরাই আংশিক) ওয়ার্ডে আ ম ম দিলসাদ (৯৫ ভোট), ৩ নম্বর (সন্দ্বীপ) ওয়ার্ডে অফতাব খান (১১৯ ভোট), ৪ নম্বর (নগর ও হাটহাজারী আংশিক) ওয়ার্ডে জাফর আহমদ (৬০ ভোট), ৫ নম্বর (হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি আংশিক) ওয়ার্ডে শওকত আলম (৫১ ভোট) এবং ৬ নম্বর (ফটিকছড়ি) ওয়ার্ডে ড. মাহমুদ হাসান।
৯ নম্বর (বোয়ালখালী-পটিয়া আংশিক) ওয়ার্ডে মো. ইউনুস (১১৪ ভোট), ১০ নম্বর (পটিয়া) ওয়ার্ডে দেবব্রত দাশ (৮৫ ভোট), ১১ নম্বর (চন্দনাইশ-পটিয়া আংশিক) ওয়ার্ডে আবু আহমদ চৌধুরী (১৭৮ ভোট), ১৪ নম্বর (সাতকানিয়া) ওয়ার্ডে জসিম উদ্দিন (৭৪ ভোট) এবং ১৫ নম্বর (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক) ওয়ার্ডে আনোয়ার কামাল (১৬১ ভোট) বিজয়ী হয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদের নির্বাচিতদের মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডে উম্মে হাবিবা (১৯২ ভোট), ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রেহানা বেগম (৩০৭ ভোট) এবং শাহিদা আক্তার (২৯৬ ভোট) জয়ী হয়েছেন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে রেহানা আক্তার ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দিলুয়ারা ইউসুফ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই নির্বাচিত হন।
সাধারণ সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন ১ নম্বর (মিরসরাই-বারৈয়ারহাট) ওয়ার্ডের শেখ আতাউর রহমান, ৭ নম্বর (রাউজান) ওয়ার্ডের কাজী আব্দুল ওহাব, ৮ নম্বর (রাঙ্গুনিয়া) ওয়ার্ডের কামরুল ইসলাম চৌধুরী এবং ১২ নম্বর (আনোয়ারা-বাঁশখালী আংশিক) ওয়ার্ডের এস এম আলমগীর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৯৩ ইউনিয়নে ভোট ১১ নভেম্বর
পরবর্তী নিবন্ধঘুষ দিতে না পারায় রেজিস্ট্রি হয়নি সমবায় প্রতিমন্ত্রীর জমি!