পারিবারিক ও সামাজিক সুসম্পর্ক ও আত্মিক সম্পর্কে টাকাপয়সা, সার্টিফিকেট ও আমিত্ব মূল্যহীন। একে অপরকে সাহায্য–সহযোগিতা, সহমর্মিতা, দায়িত্ব–কর্তব্য পালন ও আবেগীয় অনুভূতির মাধ্যমে এবং পারিবারিক বন্ধনে সহজসরল ভাষার ব্যবহার ও বিশ্বাসে যে আন্তরিকতা ও মহানন্দ অনুভূত হয় তা বাহ্যিক চাকচিক্যময় লোক দেখানোর মধ্যে নেই। হীনমন্যতা, আমিত্ববোধ ও অহংবোধ মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। এই বিশেষণের ব্যক্তি বড়ো সার্টিফিকেটধারী বা যেই গণ্যমান্য হন, বর্তমান সময়ে অন্যের কাছে তাদের ব্যক্তিত্ব হাস্যকর ও হাস্যরসে পরিণত হয়। এই যুগে লেখাপড়া শিখে সার্টিফিকেটধারী ও শিক্ষিত হওয়া যায় খুব সহজেই। ভিন্ন ভিন্ন পেশায় ভালো আয় রোজগারের সুযোগ অনেক। কেউ কারো থেকে কম নয়। সমাজে শিক্ষিতের হার অনেক বেশি। কিন্তু সুশিক্ষিত নয়। সুশিক্ষিত হতে হলে স্থান–কাল বুঝে ক্ষেত্র বিশেষে আমিত্ব বাদ দিতে জানতে হয়। বড়দের শ্রদ্ধা–সম্মান–ভালোবাসা যেমন দিতে হয়, তেমনি ছোটদেরকেও স্নেহ–আদর–ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মূল্যায়ন করতে জানতে হয়।
সম্মানসূচক ভাষার ব্যবহার, মার্জিত কথাবার্তা ও আচার আচরণে পরিচয় সুশিক্ষিতের। টাকাপয়সা কমবেশি সকলের থাকে। আজকে না থাকলেও আগামীতে আসবে। কিন্তু শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যদি একবার গত হয় তবে তা ফিরে আসে না। মানুষ চলে যায় কিন্তু কথা থেকে যায়। এই সম্পর্কের নিয়ম অতীতে ছিলো, বর্তমানে চলছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে।
পারিবারিক বন্ধনকে মজবুত করতে পুরুষের তুলনায় নারীর ভূমিকা অনেক বেশি। শুধু নিজের স্বামী সন্তান আমিত্ব চিন্তায় মগ্ন থাকা একজন সুশিক্ষিত নারীর সীমানা হতে পারে না। পুরুষের তুলনায় একজন সুশিক্ষিত নারী স্বামী সন্তানের পাশাপাশি আত্মিক সম্পর্কে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও পরিচিতজনদের পুরো পরিবারকে একতার মাধ্যমে আগলে রাখার ক্ষমতা রাখে। সমাজের পরিবেশ তখন আরো সুন্দর হয় ও শান্তি বিরাজ করে। এখানেই পার্থক্য শিক্ষিত ও সুশিক্ষিতের।