রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাতে জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয়ের পাঁচতলা ভবনের নিচের দুটি তলা অনেকটা পুড়ে গেছে। ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকালে শাহবাগ মোড়ে সংহতি সমাবেশ আয়োজন করেছিল গণঅধিকার পরিষদ। সেই সমাবেশ শেষ করে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যান দলটির নেতাকর্মীরা।
আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা পুলিশের ব্যারিকেড উপেক্ষা করে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে ভাঙচুর চালিয়ে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। ভাংচুরে অংশ নেওয়া রিফাত নামের একজন বলেন, জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ করতে হবে, আমাদের নুরু ভাইয়ের উপর হামলা করেছে, জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব রাখব না। খবর বিডিনিউজের।
প্রত্যক্ষদর্শী রিকশা চালক আক্কাস আলী বলেন, হঠাৎ একদল লোক এখানে এল। পুলিশ বাধা দিছিল। পরে পুলিশকে না মেনে তারা জাতীয় পার্টির অফিসে ঢুকে যায়। কিছুক্ষণ পরে নিচে আগুন লাগায়। জাতীয় পার্টি দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম বলেন, শাহবাগ থেকে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ঘোষণা দিয়ে এসে আমাদের কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। নিচতলার লাইব্রেরি, নামাজ ঘরসহ পাঁচতলা ভবনের সবকিছুই পুড়িয়ে দিয়েছে। চেয়ারম্যানের দপ্তরসহ সব পুড়িয়েছে। এরা মব সন্ত্রাসী, এরা মব করে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে চায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, তারা এসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে, জলকামান দিয়ে আগুন নিভিয়ে দিয়েছে। আপাতত কোনো সমস্যা নেই। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর জাতীয় পার্টির অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নিচ তলার সামনের পুরো অংশ, দোতলায় চেয়ারম্যানের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষ আগুনে পুড়ে গেছে। তবে তিন তলা, চারতলা, পঞ্চম তলার ক্ষতি হয়নি।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক মশাল মিছিলের ডাক দেয় গণঅধিকার পরিষদ। রাত সাড়ে ৯টায় মশাল মিছিল কর্মসূচি শেষে বিজয়নগর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিপেটা করে। তাতে আহত হন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ওই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ওই ঘটনার নিন্দা জানায়। পরদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় নুরের দলের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়।
হামলার ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আর আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব চেষ্টা অগ্রাহ্য হওয়ার পর সেনাবাহিনী সেদিন মব ভায়োলেন্স ঠেকানোর জন্য বল প্রয়োগে বাধ্য হয়।