সাতচল্লিশের চৌদ্দই আগস্ট পাকিস্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর পূর্ববঙ্গে কোন বিরোধী দলের অস্তিত্ব ছিলো না। কমিউনিস্ট পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা নিতে পারতো, কিন্তু ভ্রান্ত নীতির কারণে পার্টি নিষিদ্ধ হয়ে গেলে শাসক দল মুসলিম লীগের আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলো না। সেই বৈরি সময়ে পাকিস্তানে নয়া শাসকগোষ্ঠী যখন বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানতে শুরু করলো, তখন ছাত্রদের কণ্ঠেই প্রথম প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছিলো। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে একমাত্র উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে–এ ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্ররা প্রচণ্ড সাহসে তাঁর মুখের ওপর ‘নো’ ‘নো’ ধ্বনি উচ্চারণ করে তাদের দ্বিমত বা প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছিলো। সেটা ৪৮–এর মার্চের ঘটনা; তার আগে কলকাতার ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান দেশভাগের সময় ঢাকায় এসে ঢাকার ছাত্রদের সংগঠিত করে পাকিস্তানের প্রথম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ গঠন করে পাকিস্তান ধ্বংসের মেয়াদী বোমাটি পুঁতেছিলেন। সেই বোমা ঠিকই বিস্ফোরিত হয়েছিলো, তবে তেইশ বছর পর ১৯৭১ সালে। তার আগে কত ইতিহাস হয়ে গেল। ৫২, ৬২, ৬৪, ৬৬, ৬৮–৬৯, ৭১–এ ছাত্ররাই বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করে বিনি সুতোর মালা গেঁথে ইতিহাসকে এগিয়ে নিয়ে চললো– রক্তে বোনা এক নকশিকাঁথা, সুজলা–সুফলা, শস্য–শ্যামলা বাংলা। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ যখন জন্মগ্রহণ করে, আওয়ামী লীগ তখনো মাতৃগর্ভে। সুতরাং ছাত্রলীগকে অনায়াসে আওয়ামী লীগের পূর্বসূরী বলা যেতে পারে। সেই থেকে ৭১–এর মার্চের অসহযোগ আন্দোলন পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে ছাত্ররাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে উক্ত সালগুলি আন্দোলনের এক একটি মাইফফলক এবং ছাত্ররাই এসব আন্দোলনের প্রসূতি। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করলে দেখা যাবে ১৯৫২ সালে বাঙালি জাতীয় চেতনা উন্মেষের পর থেকে এক একটি আন্দোলনে জাতীয় চেতনা পুষ্ট হচ্ছে। জাতি সংগঠিত হচ্ছে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ৬৬ সালে ৬ দফা দেয়ার পর বাঙালি স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে উচ্চকিত হয়ে ওঠে। ৬৯–এর গণঅভ্যুত্থানে ডিক্টেটর আইয়ুবের পতন ঘটিয়ে জাতি আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুসহ রাজবন্দীদের মুক্ত করতে সমর্থ হওয়ায় জাতি আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে ওঠে; জাতির আকাঙ্ক্ষা তখন স্বাধীনতাকে ছোঁয়ার স্পর্ধায় আকাশে ডানা মেলেছিলো। ৭১–এর নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি আওয়ামী লীগকে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী করে বাঙালির একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তারপর সত্যি সত্যি বহু যুগের ওপার হতে রক্তের সাগরে স্নান করে এলো রক্তস্নাত স্বাধীনতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্রদের ভূমিকা, ছাত্র রাজনীতি এবং ছাত্রনেতাদের অবদান নির্ণয় করতে গিয়ে আমি অনেকদূর এসে পড়েছি। এবার সেই প্রসঙ্গেই আবার ফিরে যাওয়া যাক।
কোন ছাত্র চিরদিন ছাত্র থাকে না, ছাত্রজীবন এক সময় শেষ হয়ে যায়। ছাত্রজীবনের যখন ইতি ঘটে, ছাত্র রাজনীতিও তখন ফুরিয়ে যায়। অতঃপর জাতীয় রাজনীতিই গন্তব্য হয়ে ওঠে ছাত্রনেতাদের। ছাত্রলীগ নেতারা আওয়ামী লীগে, ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি বা কৃষক সমিতি কিংবা ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে ঢুকে বৃহত্তর জনজীবন, কৃষক, শ্রমিকের মাঝে ভবিষ্যৎ রাজনীতির ক্ষেত্র খুঁজে নেন।
রাষ্ট্রক্ষমতা দখলই একটি রাজনৈতিক দলের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এটি শুধু বুর্জোয়া রাজনীতির কথা নয়, যারা শ্রমিক কৃষক তথা সর্বহারার রাজনীতি করেন, তাঁদেরও শেষ গন্তব্য রাষ্ট্রক্ষমতা। কারণ ক্ষমতায় না গেলে দলীয় আদর্শ–কর্মসূচি বাস্তবায়নের তো অন্য কোনো উপায় নেই।
বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলেই সরকার গঠনের সুযোগ পাওয়া যায়। সুতরাং ক্ষমতা ও রাজনৈতিক দলের মাঝখানে যে ব্যবধান, সেটা ঘুচাতে হলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হয়। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা (সেটা কোয়ালিশন হোক বা একটা দল যাই হোক না কেন) অর্জন করতে পারলে ক্ষমতা ও দলের মধ্যবর্তী প্রাচীরটা উঠে যায়, ক্ষমতার মসনদ তখন নাগালের মধ্যে এসে যায়।
তো ছাত্রনেতাদের ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতিতে উত্তরণের পশ্চাৎবর্তী কারণ হিসেবে এই গল্পটাই যদি প্রেরণাদায়িনী শক্তি হয়ে থাকে, তাহলে জাতীয় রাজনীতিতে অবতীর্ণ ছাত্রনেতারা কি তাঁদের দলের নির্বাচনের টিকিট আদায় করতে সমর্থন হন? বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করলে যে চিত্রটা পাওয়া যায়, সেটা খুব আশাব্যঞ্জক নয়। আওয়ামী লীগের কথাই যদি ধরি, তাহলে আমরা দেখবো রাজনীতিটা রাজনীতিবিদদের হাত থেকে চলে যাচ্ছে। পাকিস্তান আমলে পাঞ্জাবি সামরিক–বেসামরিক আমলা নিয়ন্ত্রিত একটি অশুভ চক্রই পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রভুত্ব করতো। পর্দার আড়ালে বসে তারাই ক্ষমতার কলকাঠি নেড়ে রাজনীতিবিদের নাচাতো। বঙ্গবন্ধু আমলা নিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা কাঠামো পাল্টে সেখানে রাজনীতিবিদদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সেটা সম্ভব না হওয়ায় পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
’৭১–এ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে আমলাতন্ত্রের উপর রাজনীতিবিদদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকিস্তান আমলের শাসন প্রণালীতে অভ্যস্ত মানসিকতার আমলারা এই পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেনি। তারা মুখ বুজে থাকলেও তলে তলে ষড়যন্ত্র পাকাতে থাকে। তারা অনুকূল সময়ের অপেক্ষায় ছিলো। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তর থেকে দু’একজন, সেনাবাহিনীর কয়েকজন বিপথগামী সদস্য মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী আন্তর্জাতিক শক্তির যোগাসাজশে ’৭৫–এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে তাঁর বিদেশে থাকা দু’কন্যা বাদে পরিবারের সকল সদস্য, নিকটাত্মীয় সমেত নির্মমভাবে হত্যা করে ক্ষমতার পালাবদল ঘটাতে সক্ষম হয়। তখন কোণঠাসা আমলারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে জিয়া–এরশাদের কুশাসনে দেশ মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে উল্টো পথে যাত্রা করে। নব্বইর গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতনের পর দেশে একটি পরিবর্তন আসে; কিন্তু ৯৬–তে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত দেশ মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরে আসেনি। ইতিমধ্যে রাজনীতিতে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটে যায়। তাতে রাজনীতির ওপর রাজনীতিবিদের নিয়ন্ত্রণ আবার আলগা হয়ে যেতে থাকে। ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক–বেসামরিক আমলারা রাজনৈতিক দলে নাম লিখিয়ে দলীয় টিকিট বাগিয়ে সংসদ নির্বাচনে অবতীর্ণ হয় এবং বিজয়ী হয়ে সংসদেও উপবেশন করতে থাকে। জিয়ার বিএনপি এবং এরশাদের জাতীয় পার্টিতে প্রথমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরে আওয়ামী লীগও এই পরিস্থিতির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। যারা সংগ্রাম করে, অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার এবং জেল–জুুলুম সহ্য করে রাজনীতিতে জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছেন, যেসব ছাত্রনেতা ছাত্ররাজনীতি শেষে জাতীয় রাজনীতিতে এসেছিলেন, রাজনীতির কক্ষপথ আবর্তনে তারা পিছিয়ে পড়েন এবং সংসদীয় রাজনীতির প্রতিযোগিতায় অর্থ ও পেশীশক্তির কাছে হেরে যান। এমনকি নির্বাচনের পূর্বে ভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা প্রকৃত আওয়ামী লিগারদেরকেই ঠেলে ফেলে দেন সাইডলাইনে। এদের কাছে রাজনীতি কোন আদর্শ নয়, দর্শনও নয়, তাদের কাছে রাজনীতি হচ্ছে ক্ষমতা দখলের মাধ্যম এবং তাদের ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে হচ্ছে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্থবিত্তের অধিকারী হওয়া, প্রভাব–প্রতিপত্তি অর্জন ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সবার কাছ থেকে সমীহ আদায় করা।
আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার সময় অনেক ছাত্রনেতাকে আওয়ামী লীগের টিকিট দিয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ তোফায়েল আহমদ, কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলী, নূরে আলম সিদ্দিকী, আবদুল কুদ্দুস মাখন, চট্টগ্রামে আবু ছালেহ, এম এ মান্নান, মির্জা আবু মনসুর, নুরুল আলম চৌধুরী, শাহ–ই–জাহান চৌধুরী, ডা. শামসুদ্দিন আহমদকে ৭০ ও ৭৩–এর নির্বাচনে মনোনয়ন দান করেছিলেন। সিটি কলেজের ছাত্রনেতা, ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও মুক্তিযুদ্ধে বাঁশখালী থানার এফএফ কমান্ডার সুলতান উল কবির চৌধুরীকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ৯১–এ মনোনয়ন দান করলে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।
তবে তিনজন ছাত্রনেতা সংসদ সদস্য হতে না পারায় চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ ও হতাশা কখনো ঘুচবে না। তাঁরা হচ্ছেন– আশরাফ খান, এস এম ইউসুফ, ইদরিস আলম সংসদীয় রাজনীতির সুযোগ পান নি। এস এম ইউসুফকে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছিলেন, কিন্তু ঘরশত্রু বিভীষণদের ষড়যন্ত্রে তাঁর নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। জহুর আহমদ চৌধুরী ও প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম চৌধুরীর স্নেহভাজন ছিলেন ইদরিস আলম; জহুর আহমদ চৌধুরী তাঁকে পুত্রবৎ স্নেহ করতেন। ইদরিস আলম সংসদে গিয়ে কোরান, হাদিস, গীতা, বাইবেল প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থ এবং কবি সাদী, গালিব, ইকবাল, রুমী, হাফিজ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও জীবনানন্দ দাশের কবিতার চরণ উদ্ধৃত করে তার বুকে যে আগ্নেয়গিরি ছিলো, তা থেকে অনর্গল লাভা উদগীরণ করে সংসদ অধিবেশনকে স্পেল বাউন্ড করে দিয়েছেন এই দৃশ্য দেখার ইচ্ছা মনে মনে পোষণ করতেন জহুর আহমদ চৌধুরী এবং কখনো কখনো তা প্রকাশও করতেন। বাগ্মীপ্রবর আশরাফ খাঁন সংসদে যেতে পারলে হয়তো বাক চাতুর্যে নূরে আলম সিদ্দিকীকেও হারিয়ে দিতে পারতেন। এস এম ইউসুফ সংসদে গেলে সাহিত্য, ধর্ম, দর্শন, ইতিহাস ইত্যাদি থেকে উদাহরণ দিয়ে সারা বিশ্বের রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করে যে গুরুগম্ভীর বক্তৃতা করতেন, তাতে সংসদ অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে থাকতো, তারপর করতালিতে মুখর হয়ে উঠতো। কিন্তু হায়! তাঁরা কেউ সংসদে যেতে পারেন নি। তাঁদের সংসদীয় বক্তৃতা শোনার সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হলাম। কিন্তু সিঙটিজ, সেভেনটিজ ও আশির দশকের ছাত্রনেতা, যাঁরা এখন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, দুঃখজনক হলেও সত্য তাঁদের কোনো মূল্যায়ন হচ্ছে না। প্রৌঢ়ত্বের দিকে হেলে পড়েছে যাঁদের জীবন–সূর্য, তাঁরা দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ছাত্রজীবন থেকে যাঁরা রাজনীতি করে আসছেন; ৬৯–এর গণঅভ্যুত্থান থেকে আশি–নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারি এরশাদ ও নব্য স্বৈরাচার খালেদা জিয়ার আমলে যাঁরা রক্তাক্ত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজেরাও পুলিশ ও প্রতিপক্ষের আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন, দলের মনোনয়ন ঘোষণার সময় তাঁদের নাম বিবেচনায় আসে না, এটাই তাঁদের চরম দুর্ভাগ্য।
স্বাধীনতার পর থেকে গত পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলন–সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেসব ছাত্রনেতা রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবিষ্ট হয়ে সেখানেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন, তাঁরা হচ্ছেন– নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা–উত্তরকালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বর্তমানে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র এবং নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছিরউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম।
লেখক : সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতি সংগঠক