জাতীয় যুব সংসদের চতুর্দশ অধিবেশন গতকাল শনিবার নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহায়তায় জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী যুব সংগঠন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর আয়োজন করে। সকাল থেকে শুরু হওয়া অধিবেশনে দেশের ৬৪ জেলা থেকে কয়েকশ যুব সাংসদ অংশগ্রহণ করেন। দিনব্যাপী বিভিন্ন সেশনে জলবায়ু পরিবর্তন, স্মার্ট বাংলাদেশ পলিসি, জাতীয় যুব নীতির পর্যালোচনা, আইসিটি, জাতীয় বাজেট, মানবাধিকার, পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে সংসদীয় বিতর্কে অংশ নেন সারা দেশ থেকে আগত যুব সাংসদরা।
ইয়ুথ এনগেজমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি প্রকল্পের আওতায় যুব সংসদের আগে বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হয়েছে আঞ্চলিক যুব সংলাপ, যুব ক্যাম্প, জাতীয় পর্যায়ে যুব সংলাপ, ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ ব্যাচে অসংখ্য যুব সদস্য অংশ নিয়েছেন, জানিয়েছেন প্রত্যাশা। এই আয়োজনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, আজকের তরুণদের মেধায় আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তাদের আধুনিক চিন্তা–চেতনায় রাষ্ট্র ও সমাজ এগিয়ে যাবে। আজকের তরুণদের সকল ক্ষেত্রে মেধা এবং দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। তাদের প্রতিটি কাজে সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। অধিবেশন উদ্বোধন করেন সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু, দেলোয়ারা ইউসুফ এমপি, শামীমা হারুন লুবনা এমপি, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের মেধাবী যুবকদের মেধা ও মননের ওপর ভিত্তি করে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। আজকের মেধাবী যুবকরা তাদের মেধা ও আধুনিক চিন্তা–চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। পৃথিবীর ইতিহাসে যুবকরাই সকল অন্যায়–অবিচার ও শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। একটি আলোকিত সমাজ ও দেশ গঠনে যুবক ও তরুণদের বিকল্প নেই।
প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে ইয়ুথরাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকায় সবসময় অবতীর্ণ হয়েছে। আমাদের যুবকদের সৃজনশীল ও মানবিক গুণগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের মেধাকে কাজে লাগাতে পারলে সমাজ ও দেশ দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. তসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) এম এ আখের, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক বোরহানুল এইচ চৌধুরী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাড. আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম জেলা পিপি অ্যাড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন ধ্রুবতারার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জাতীয় যুব কাউন্সিলের সদস্য অমিয় প্রাপণ চক্রবর্ত্তী অর্ক।
যুব সংসদের সমাপনীতে যুব ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। গৃহীত হয় নতুন প্রজন্মের বাজেট ভাবনা। আয়োজনে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা গুণীজনদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেওয়া হয়। আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। ‘চট্টগ্রামের গর্ব’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এভারেস্ট বিজয়ী ডা. বাবর আলী। ‘ব্যবসায়ী আইকন’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ভিয়েতনামের চট্টগ্রামস্থ অনারারি কনসাল ও ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রধান ও জাতীয় যুব সংসদ পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা লায়ন ডা. ইসমত আরা বেগম, জাতীয় যুব সংসদ পরিচালনা কমিটির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার অন্তু কুমার রায়, সহকারী প্রধান শাহিন রানা, আবির মোহাম্মদ প্রমুখ।