অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম জাতীয় বাজেট ২০২৫–২৬ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য পাঁচ হাজার আটাত্তর কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ–এর বাজেট বক্তৃতায় আমরা সেরকমটাই জেনেছি। যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আটত্রিশ কোটি টাকা বেশি। উক্ত বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয় মহিলা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন একাডেমির মাধ্যমে মহিলাদের জন্য দক্ষতাভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে এবং উপজেলা পর্যায়ে মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় নির্বাচিত বিশ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসার পরিবেশ অধিকতর উন্নত করে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে আগামী ২০২৫–২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে একশ পঁচিশ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শাখায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি করে আলাদা ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কর্মজীবী নারীর পাশাপাশি অনেক নারী হোমমেকার হিসেবে তাদের শ্রম এবং সময় উৎসর্গ করছেন। কিন্তু তাদের এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে প্রায়শই যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। সরকার এবং আপামর জনসাধারণের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনপূর্বক ভবিষ্যতে তাদের অবদান আর্থিক মানদন্ডের ভিত্তিতে জিডিপিতে যোগ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। শিশুদের বিষয়ে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে শিশু–শহীদদের চুরাশিটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং এ বিপ্লবে আহত শিশুদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, এবারের বাজেটের মূল নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়। এছাড়াও এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ নব্বই হাজার কোটি টাকা। এ হিসেবে গত অর্থবছরের চেয়ে বাজেটের আকার কমেছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে দুই লাখ ছাব্বিশ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির তিন দশমিক ছয় শতাংশ।