জাতীয় ছড়া দিবস। এই প্রসঙ্গটি প্রথম উচ্চারিত হয়। প্রথম জন্ম হয়। বিপ্লবের–স্বাধীনতার– বাণিজ্যের ও সাহিত্য সাংস্কৃতির তীর্থস্থান চট্টগ্রাম থেকে। প্রবক্তা কবি শিশুসাহিত্যিক রাশেদ রউফ। এক অমূল্য রত্নকে সর্বোচ্চ সম্মানের আসনে আসীন করাই জাতির ধর্ম। এই ধর্ম চেতনায় জন্ম দেওয়াই কবির লক্ষ্য। রতনে রতন চেনে এই কথা এখানেই যথার্থ। তত্ত্ব তথ্য খুঁজে রূপকারের কারিগর হয় একজন লেখক। সঠিক অনুসন্ধিৎসায় রূপদান করে সে উপাত্তের রূপক হতে পারে। চেতনা অনুভব গবেষণায় উপলব্ধিতে সে শ্রেষ্ঠ মানিক্য খুঁজে পেতে পারে। তাই একজন লেখক একজন বিচারক যোদ্ধা উদ্দীপক উজ্জীবক উচ্চারক অনুশাসক সমাজ দেশের মানুষের হিতৈষী।
ছড়ায় ছড়ায় কাটে বেলা, মধুর ছন্দের ছলাকলা। সহজ কথার ফুলঝুরিতে, শব্দ নাচে দিনেরাতে।
নানাভাবে সে মানুষ প্রকৃতির জীবন জীবিকার ইতিহাসের অন্তঃশ্রবণ অন্তঃদহন অন্তক্ষরণের প্রগ্রবণ রচনা করতে পারে। ছন্দে শব্দফুলে মালা গাঁথতে পারে। অন্তরে দোলা বেদনা আনন্দ আন্তরিকতা সমপ্রীতি উৎসাহ ও মানুষ প্রকৃতি দেশ প্রেমের অনুরণন তুলতে পারে। তাই লেখক সমাজ দেশ ও রাষ্ট্রের এক শক্তিশালী হাতিয়ার।যে সৃষ্টি করতে জানে সে ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদক ফলস্বরূপ’। যে কত অজানাকে উদঘাটন করে পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য মানুষের পরিত্রাণের জন্য সে পথ নির্দেশনার উপক্রমনিকা রচনা করতে পারে। যে ছন্দশব্দের মিশ্র রসে জীবনের রস, স্বাদের পথ খুঁজে দিতে পারে। যার ছড়া কাব্যের আবৃত্তিরসে আপ্লুত হৃদয়ে। বাঁচার, জয়গানের আনন্দ, শক্তি উৎসারিত হতে পারে। সার্থক লেখক সেই। যে হাসাতে পারে, ভাবাতে পারে, কাঁদাতে পারে। অভিভূত করতে পারে, উদ্দীপনা আনতে পারে, স্বপ্নের ছবি, জীবনের ছবি, আশার ছবি প্রাণে প্রাণে প্রগ্রবনের গ্রোতধারায় বয়ে দিতে পারে, মূল্যায়ন তৈরি করতে পারে , তবেই সার্থক কবি।
‘মনের ভিতর ঘুমের শিশু, সে জানেনা কোন কিছু। সে দেখে দেখে অনেক শেখে, ছড়া শুনে বুদ্ধি মেখে।’ তেমনি এক শিশু সাহিত্যের কারিগর। বাংলাদেশের ছড়ার জাদুকর সুকুমার বড়ুয়ার জন্মদিনে ২০২৫ সালের ৫ই জানুয়ারি এই দিবসের নাম প্রবর্তন করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন উপলব্ধি করেছেন এক চিরন্তন সত্য। সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে। চট্টগ্রামে ছড়া নিয়ে ছড়াকারদের নিয়ে হয়েছে অনেক কাজ। ছড়া পাঠের আসর, ছড়া উৎসব, জাতীয় দিবস গুলিতে, ঋতু ভিত্তিক বই উৎসবে, স্বাধীনতার বই উৎসব, একুশের বই উৎসবে, চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম একাডেমির নানা উৎসব আয়োজনে বিশেষ করে স্বাধীনতার বই মেলা, বিজয় বই উৎসব, শরৎকালীন বই উৎসব, মাসিক সাহিত্য আড্ডা ইত্যাদি নানা কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম শুধু নয় বাংলাদেশ ও বহিঃজগতের অনেক কবি সাহিত্যিকদের হৃদয়ঙ্গম পরিবেশ ও পরিবেশনায় মুগ্ধিত হয় আয়োজন। চট্টগ্রাম একাডেমি প্রথম বাংলাদেশে অন লাইন বই উৎসব করে। এই উৎসব আয়োজনে বাইরের স্বনামধন্য বাঙালি লেখক ছড়াকার কবি সাহিত্যিকদের সম্পৃক্ত করেন। যেমন লুৎফর রহমান রিটন, অজয় দাশগুপ্ত প্রমুখ। লেখকদের মিলনমেলা চট্টগ্রামে সাহিত্য সাংস্কৃতিক আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম একাডেমি। লেখক সম্মিলনে, পাঠক সম্মিলন সাহিত্য সম্মেলন, কবি সম্মেলন, ছড়া সম্মেলন ইত্যাদি নানা নামে আয়োজনে চট্টগ্রামের লেখক কবি সাহিত্যিকরা সম্মিলিত হয় গৌরবের সাথে।একসময় কালধারা থেকেও এই সাহিত্য আড্ডা আয়োজিত হতো। চট্টগ্রাম সাহিত্য সৃজনশীল ঐতিহ্যেও প্রাচুর্য। ছড়ার জাদুকর সুকুমার বড়ুয়া এই চট্টগ্রামের একজন। আমাদের গর্ব। চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্যের একজন কিংবদন্তি।