জাতীয় অনুষ্ঠানে বাজে না জাতীয় কবির গান, আক্ষেপ নাতনির

| সোমবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৩ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান বাজানো হয় না বলে আক্ষেপ করেছেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী। কবির ‘দুর্গম গিরি, কান্তারমরু, দুস্তর পারাবার হে’ গানটি জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে বাজানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

কাজী নজরুলের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে ফুল দিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খিলখিল কাজী। কবির আরেক নাতনি মিষ্টি কাজীও ছিলেন তার সঙ্গে।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। সব বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। সাম্য ও মানবতার চেতনায় সমৃদ্ধ ছিল তার লেখনী। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য হয়ে ওঠেন ‘বিদ্রোহী কবি’। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ই ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় মারা যান কবি নজরুল। রেওয়াজ অনুযায়ী বাংলা পঞ্জিকার তারিখ মেনে তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করে বাংলাদেশ। খবর বিডিনিউজের। খিলখিল কাজী বলেন, জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে কবির কাজী নজরুল ইসলামের গান বাজানো হয় না। অথচ তার গান দেশের যে কোনো সংকট মুহূর্তে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ‘চল চল চল’ গানটা জাতির পিতা রণসংগীত করেছিলেন। সেই গানটাও এখন সেভাবে গাওয়া হয় না। ‘দুর্গম গিরি, কান্তারমরু, দুস্তর পারাবার হে’ গানটি জাতীয় পর্যায়ে ব্যবহার করা দরকার। এটা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গান।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যসম্ভার বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান খিলখিল কাজী। তিনি বলেন, তার রচনাগুলো আজ পর্যন্ত অনুবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটা সরকারের দায়িত্ব। তার অজস্র সৃষ্টি আমাদের বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো সংগ্রহ করা সরকারসহ আমরা ব্যক্তিগতভাবে যারা কাজ করছি, সকলের দায়িত্ব। তিনি আমাদের জাতীয় কবি, বিশ্ব মানবতার কবি। তার কর্ম ও সৃষ্টি ইংরেজিসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় অনুবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করি। সকল নিপীড়িত ও উৎপীড়িত মানুষের কণ্ঠ কাজী নজরুল ইসলাম। যদি এই নিপীড়িত ও উৎপীড়িত মানুষ থাকবে, ততদিন কাজী নজরুল ইসলাম থাকবেন।

বাংলা একাডেমিতে কবির ব্যবহৃত বর্ধমান হাউজের কক্ষটি সংরক্ষণেরও দাবি জানান খিলখিল কাজী। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, তিনি যখনই ঢাকায় আসতেন বর্ধমান হাউজে উঠতেন। বর্ধমান হাউজটা কিন্তু সংরক্ষণ করা হয়নি। আমরা মনে হয়, অবিলম্বে তার ব্যবহৃত কক্ষটি সংরক্ষণ করে কবির যাবতীয় জিনিস গুছিয়ে রাখা উচিত।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে নজরুলকে সম্মানসূচক ডিলিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয় নজরুলকে। সে বছরই ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মানবতা ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের। জাতীয় মর্যাদায় কবিকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের উত্তর পাশে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫০ শিশুর চিকিৎসা করাবে রোটারি ক্লাব
পরবর্তী নিবন্ধদেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী