জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য

| রবিবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারের চার বছর পূর্ণ হওয়ার প্রাক্কালে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বিস্তারিত খতিয়ান দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে ‘অনেক’ এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা। তিনি বলেন, আমাদের দেশ এগিয়েছে অনেক। তবে আরও এগিয়ে নিতে হবে। একটি উন্নতসমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন আমাদের লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নানা অনুসঙ্গ ধারণ করে আমরা তরুণদের প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য নির্ধারণ, বাস্তবায়ন আর দৃঢ়তাপূর্ণ পদক্ষেপের প্রশংসা করতেই হয়। তাঁর আত্মবিশ্বাসের আত্মউদ্বোধন ঘটে বহু আগেই। তবে গত শুক্রবারের ভাষণে বলেছেন, ‘জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। তবে, যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাব।’ এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সেবাকার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে স্পষ্টভাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নয়, বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবেও পরিগণিত। ২০২০ সালে ফোর্বস সাময়িকী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল ৩৯তম, ২০১৯ সালে তার অবস্থান ছিল ২৯তম, ২০১৮ সালে ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদদের তালিকায় শেখ হাসিনা জায়গা করে নিয়েছেন। শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক। তিনি আজ সারা পৃথিবীতে সফলতার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীতে জায়গা করে নিয়েছে মর্যাদার অনন্য আসনে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মূল চাবিকাঠি যাঁর হাতে, তিনি হলেন শেখ হাসিনা।

অল্প ক’দিন আগে মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছে। সম্প্রতি নর্দার্ন ভার্জিনিয়ার হোটেল রিটজকার্লটনের বলরুমে নেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক’র নিবন্ধটি এই মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত হয়।

নিবন্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।

এবারে তাঁর লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ । এখানে উল্লেখ করা যায়, আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ২২তম জাতীয় সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে চারটি ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন। এগুলো হলো স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যেখানে প্রতিটি জনশক্তি স্মার্ট হবে। সবাই প্রতিটি কাজ অনলাইনে করতে শিখবে, ইকোনমি হবে ইইকোনমি, যাতে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসে করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মযোগ্যতা’ সবকিছুই ইগভর্ন্যান্সের মাধ্যমে হবে। ইএডুকেশন, হেলথসহ সবকিছুতেই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা তা করা সক্ষম হব এবং সেটা মাথায় রেখেই কাজ চলছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট গভর্মেন্ট, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট শিল্প কলকারখানা ও ব্যবসাবাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্যি, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে রোবোটিকস, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, জৈব প্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছি আমরা। বাংলাদেশ কোথাও পিছিয়ে নেই। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির যে প্রস্তুতি চলছে, তাও সফল হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে স্মার্ট যন্ত্র ও প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদেরও চিন্তাচেতনা, আচারআচরণ ও সংস্কৃতিতে হতে হবে স্মার্ট। তাঁরা যেন সেই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে অবদান রাখতে পারেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে