বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া ফেসবুকের ‘অপব্যবহার’ বন্ধে এর মূল কোম্পানি মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গসহ পাঁচ কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের এক আইনজীবী। ঢাকার বাসিন্দা সলিম সামাদ, ভিক্টর রায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক এস এম মাসুম বিল্লাহ ও আইনজীবী জর্জ চৌধুরীর পক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার নোটিসটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাপস কান্তি বল। তিনি আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর। খবর বিডিনিউজের।
নোটিসে বাংলাদেশে ফেসবুকের কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। ‘কোনো রকম গাফিলতি ছাড়া’ নোটিস পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
মার্ক জাকারবর্গ ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালককে ইমেইলে নোটিসটি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ দায়বদ্ধ কর্তৃপক্ষ’ হওয়ায় তাদের এ নোটিস পাঠানো হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তারা।
দুর্গা পূজার সময় গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি পূজা মণ্ডপে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন রাখার কথিত অভিযোগের একটি ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ধরনের ‘বিভ্রান্তিকর, ভুল, মিথ্যা তথ্যের’ লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও প্রায়ই ফেসবুকে ‘ভাইরাল’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে নোটিসে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বরাত দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, গত ১৪ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ২৭টি জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সারা দেশে অন্তত ৯ জন নিহত হন।
ফেসবুকে ‘ছড়িয়ে দেওয়া’ এ ধরনের ভডিও, অডিও, ছবি পোস্টকে কেন্দ্র করে এর আগেও যে কঙবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সুনামগঞ্জের শাল্লা, ভোলার বোরহান উদ্দিন, সাতক্ষীরা, লালমনিরহাটের পাটগাঁসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে নোটিসে।
সেখানে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিহত করতে ‘সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ’ হয়েছে, তাতে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। অথচ এ ধরনের বিভ্রান্তিকর, ভুল, ভুয়া, মিথ্য খবর, ভিডিও, অডিও, ছবির প্রচার-প্রকাশ বন্ধ করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী তাদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব।