বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী। সর্বশেষ গতকাল নগরী যখন ডুবে ছিল জলে, সেই সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করে জামায়াতে ইসলামী বিক্ষোভ মিছিল করে নগরীর মুরাদপুরে। দলটির উদ্দেশ্য দুটো; এক. নিজেরা যে ফুরিয়ে যায়নি তার জানান দেওয়া এবং দুই. নির্বাচন বানচালের চেষ্টার মধ্য দিয়ে বিদেশী শক্তির কাছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে জামায়াত শিবিরের কর্মযজ্ঞ মনিটরিং করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট নিজস্ব কৌশলে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে।
সূত্র মতে, জামায়াতের আপাতত লক্ষ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে দৃশ্যমান থেকে সরকার বিরোধী কর্মসূচি পালন করা – যাতে করে নির্বাচনের আগে ভোটের মাঠের জন্য দলকে প্রস্তুত করে তোলা যায়। আদালতের একটি রায়ের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছিল। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আবার সক্রিয় হওয়া দলটির নেতারা আশা করছেন, নির্বাচন নিয়ে সবপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে এবং সবাই তাতে অংশ নেয়ার পরিবেশ তৈরি হলে তারাও তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবেন আইনি প্রক্রিয়াতেই।
গতকাল রোববার (৬ আগস্ট) সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের নেতৃত্বে মিছিলে জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ আটক নেতাকর্মী ও আলেম ওলামাদের মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ সারাদেশে সভা সমাবেশ করার সাংবিধানিক অধিকার না দেয়ার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিলটি হয়। এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, মিছিলের জন্য তাদের কোনো অনুমিত নেই। শুনেছি তারা মিছিল করেছে। তিনি বলেন, সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। ২ নম্বর গেটের দিকে আমাদের মোবাইল টিম ছিল। রাতে গাড়িটা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে পানিতে। ওরা যেতে যেতেই মিছিলকারীরা চলে যায়। সেই ফাঁকে তারা (জামায়াত) সম্ভবত তিন–চার মিনিটের একটা মিছিল করেছে। আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করছি।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত। ২৮ জুলাই জুমার নামাজের পর নগরের বাদামতল থেকে মিছিল সহকারে চৌমুহনী পৌঁছে পুলিশের ওপর হামলা করে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের একজন এএসপিসহ তিনজন গুরুতর আহত হন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা এখন জঙ্গি স্টাইলে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। এজন্য সহজেই তাদের গোপন পরিকল্পনা জানা যায় না। নির্বাচনকালীন কোনও একটি ইস্যুকে সামনে দাঁড় করিয়ে তারা মাঠে নেমে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।