জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অগ্রগতি জনগণের সামনে উপস্থাপনসহ একাধিক দাবি

চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের অগ্রগতি জনগণের সামনে উপস্থাপনসহ একাধিক দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। দাবি সম্বলিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী বর্ষার আগেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভরাট খাল ও ড্রেনগুলো সংস্কার করা, সিডিএ কর্তৃক প্রকল্পের হিসাব প্রকাশ করা এবং সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন উভয় সংস্থা কর্তৃক খোলা ড্রেনে পড়ে মারা যাওয়াদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।
পরিষ্কার না করায় খাল-ড্রেনে ময়লা পানি জমাট হয়ে আছে জানিয়ে ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, ময়লা পানি জমে দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। এ সময় নগরীকে মশামুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় গণ অনশনসহ বিভিন্ন ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খালেদ, গোলাম রহমান ও টি আর খান। নগরের বিভিন্ন খালে মেগা প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের পিছনে যে খালটি তা চাক্তাই খালের অংশ, কিন্তু সেখানে কোন কাজ শুরু হয়নি। সেখানে পলিথিন ব্যাগ এবং আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে। খালের উপর সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব সার্কেল-২ এর অফিস এখনো বহাল আছে। এতে খালের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ হাই কোর্টের একটি সিদ্ধান্তের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক এবং বেআইনি। কর্পোরেশনের রাজস্ব সার্কেলের ভবনটি ভাঙা না হলে আমরা হাই কোর্টের নির্দেশনার জন্য উদ্যোগ নেব।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শেখ মুজিব রোড কালভার্ট সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্লুইচ গেটগুলোর নির্মাণ কাজ কতটুক হয়েছে তা জনগণ এখনো জানে না। মুরাদপুর শহীদ জানে আলম সড়কসহ নগরীর বেশিরভাগ গলিতে ড্রেনগুলো মেগা প্রকল্পের আওতায় এনে সংস্কার ও সমপ্রসারণ না করায় ময়লা পানি জমে দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, বর্তমান মশার উপদ্রব, ভরাট খাল, নালা, সংস্কারবিহীন অলিগলি, যানজট, শব্দ ও পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি দেখে মনে হয় না এখানে কোনো সিটি কর্পোরেশন বা কর্তৃপক্ষ রয়েছে। মশার উপদ্রব থেকে জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে সিটি কর্পোরেশন। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
ব্যারিস্টার মনোয়ার বলেন, সিটি মেয়ররে নির্বাচনী ইশতেহারে এক নম্বর প্রতিশ্রুতি জলাবদ্ধতার দ্রুত সমাধান। তিনি এ থেকে সরে আসবেন না আশা করছি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব কী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু জলাবদ্ধতা, যানজট, মশার অত্যাচার, সংস্কারবিহীন ভাঙা অলিগলি, রাস্তাগুলোর পরিবেশ ও শব্দদূষণ আমাদের সেই স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে বারবার গুঁড়িয়ে দিচ্ছে আর মানুষকে করছে হতাশাগ্রস্ত। এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কতটুকু মাথাব্যথা আছে তা জনগণ বুঝতে পারছে না। চট্টগ্রাম মহানগরকে সার্বিকভাবে উন্নত করতে জনগণের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নেই জনগণকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসচেতন করার কোনো কর্মকাণ্ড। এটা বর্তমান সরকার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদের আগে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ২৫ এপ্রিলের মধ্যে
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা