বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সব কর্মকাণ্ডের মূলে দুর্নীতি ও লুটপাট। জলবায়ু পরিবর্তন তহবিলের অর্ধেক টাকা লুট করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। জনগণের প্রতি এদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। গত দুই দিন আগে যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে এখানে পরিবেশ প্রকৃতির ওপর কত টাকা বাজেট রাখা হয়েছে?
তিনি বলেন, আজকে একটি দানব সরকার আমাদের সবকিছুকে তছনছ করে দিয়েছে। সেখান থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। খালেদা জিয়া অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে বিএনপির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, হতাশ হবেন না। সংগ্রাম লড়াই করেই এগোতে হবে। দানব সরকার সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগোতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের নেতাদের বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের, সরকার দলীয়দের ও বিশ্ব নেতাদের কমিটমেন্ট প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্লাইমেট চেঞ্জের ওপর বিশ্ব ব্যাংকের একটা ফান্ড আছে। সে ফান্ড থেকে গত কয়েক বছর ধরে তারা ৭শ কোটি টাকা ফান্ডও পেয়েছে। তার অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে, আর অর্ধেক ফেরত দিয়েছে। সরকারের কর্মকাণ্ডের মূল লক্ষ্য ছিল লুট করা। লুট করা ছাড়া তাদের আর কোন কর্মকাণ্ড আমি দেখতে পাই না।
তিনি বলেন, সরকার বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করছে। এই মেগা প্রজেক্টগুলো কেন? বার বার করে বলছি করোনা থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য নগদ টাকা সরবরাহ করতে। সেদিকে সরকারের কোন লক্ষ্য নেই। তারা এই পারপাসে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মেগা প্রজেক্টের জন্য এবারও দিয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যেটা এই মুহূর্তে কোন প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মানুষকে বাঁচানোর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবী অতি দ্রুত ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। কারণ উন্নত দেশগুলো তাদের স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করেছে। কার্বনের কারণেও ওজন মণ্ডল ফুটো হয়ে গেছে। যার ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা সৃষ্টি হয়েছে। এই উষ্ণতার ফলে পৃথিবীর সব ইকোসিস্টেম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে বিশ্ব নেতাদের একটা কমিটমেন্ট প্রয়োজন। সে কমিটমেন্ট নিয়ে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেন, খালোদা জিয়া পরিবেশের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা ইকো ব্যালেন্স রক্ষা করার জন্য। এই যে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী, সে সময় লাখ লাখ গাছ লাগানো হয়েছিল। রাস্তার ধারে গাছ লাগাতে সামাজিক বনায়ন হবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান সাহেব যে খাল খনন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন তার তিনটা দিক ছিল। একটি হচ্ছে প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণ করা ও সেখান থেকে ইরিগেশন করা, মাছের চাষ করা এবং খালের দুই ধারে বাগান তৈরি করা।
বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহসম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম, প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম, ড. মো. আকতার হোসেন, অধ্যাপক জামাল উদ্দীন নুরু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।