কক্সবাজারের খুরুশ্কুলে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় আবাসন প্রকল্পে পুনর্বাসনের জন্য জলবায়ু উদ্বাস্তুদের প্রকৃত তালিকা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। মূলত উচ্ছেদের গুজব ছড়িয়ে হাজার হাজার বাসিন্দাকে ঘর থেকে বের করে সড়ক অবরোধের মাধ্যমে এই বাধা সৃষ্টি করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়ায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রশাসনের এ তালিকা করতে যাওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, সমিতি পাড়ার বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করার জন্য তালিকাটি করা হচ্ছে তাই এলাকার বাসিন্দারা বাধা দিয়েছেন। সকাল থেকে সমিতি পাড়ার বাসিন্দারা রাস্তায় বিক্ষোভ করে এর প্রতিবাদ জানান। পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, সমিতি পাড়ার কিছু লোকজন বাসস্থানের সমস্যার কথা বলতে কয়েকদিন আগে আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, তারা প্রকৃত উদ্বাস্তু তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন তাদেরকে পার্শ্ববর্তী খুরুশকুল এলাকায় গড়ে উঠা সরকারি আবাসন প্রকল্পে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিতে গেলে সরকারি কিছু নিয়ম রয়েছে, তার একটি হচ্ছে আগে তালিকা তৈরি করতে হবে। তারই প্রেক্ষিতে আজকে (গতকাল) প্রশাসনের একটি দল তালিকা করতে সমিতিপাড়ায় গেলে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে বাধা দেয়।
সূত্র মতে, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়া এলাকাটিতে অন্তত ৭০ হাজার মানুষের বসবাস। তারা দীর্ঘ অর্ধশত বছরের কাছাকাছি এই জায়গায় অবস্থান করছেন। এখানে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় শুটকি মহাল। হাজার হাজার নারী–পুরুষ এই মহালের উপর নির্ভরশীল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিমানবন্দর নির্মাণের অজুহাতে দখল চেষ্টারত এলাকাটিতে একটি চক্র বিলাসবহুল স্থাপনা নির্মাণের নকশা আছে বলে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। এর আগেও উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছিলেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের পাশাপাশি, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেও আইন–শৃক্সখলা বাহিনী কোনো অঘটন ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’









