জর্ডানের সাবেক যুবরাজ হামজা বিন হুসেইন জানিয়েছেন, সমালোচকদের দমনের অংশ হিসেবে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তার আইনজীবীর মাধ্যমে বিবিসির কাছে পাঠানো এক ভিডিওতে জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহর সৎ ভাই রাজপুত্র হামজা দেশটির নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও হয়রানি করার অভিযোগ করেছেন। বিবিসি জানিয়েছে, কথিত একটি অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার পর ওই ভিডিওটি পাঠান হামজা। রাজপুত্র হামজাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে, এমন তথ্য এর আগে অস্বীকার করেছিল জর্ডানের সামরিক বাহিনী। খবর বিডিনিউজের।
তবে তারা জানিয়েছে, দেশের ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে’ লক্ষ্যস্থল করতে ব্যবহার করা হতে পারে এমন পদক্ষেপ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হামজাকে। রাজপুত্র হামজা স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠী নেতাদের সঙ্গে দেখা করার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই নেতাদের মধ্যে হামজা কিছুটা সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। রাজপুত্র হামজা কোনো অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে তিনি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ নন বলে দাবি করেছেন। হামজা জর্ডানের প্রয়াত বাদশা হুসেইন ও তার প্রিয় স্ত্রী রানি নূরের বড় ছেলে। যুক্তরাজ্যের হ্যারো স্কুল ও রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি, স্যান্ডহার্স্টের গ্র্যাজুয়েট হামজা যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেছেন। তিনি জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীতেও দায়িত্বপালন করেছেন। বাদশা হুসেইনের প্রিয় সন্তান হামজাকে ১৯৯৯ সালে জর্ডানের যুবরাজ ঘোষণা করা হয়েছিল। হুসেইনের মৃত্যুর পর হামজাকে কম বয়স ও অনভিজ্ঞ বিবেচনা করে উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। তার বদলে আব্দুল্লাহ জর্ডানের বাদশা হন। ২০০৪ সালে বাদশা আব্দুল্লাহ হামজার যুবরাজ খেতাব কেড়ে নেন। এতে রানি নূর মর্মাহত হন, কারণ তিনি তার বড় ছেলেকে বাদশা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। গত শনিবার রেকর্ড করা ভিডিওটিতে হামজা বলেন, আজ সকালে জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এসে আমাকে জানালেন আমার বাইরে যাওয়ার, লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার বা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি নেই। এর কারণ যে সব বৈঠকগুলোতে আমি উপস্থিত ছিলাম বা আমি যেসব জায়গায় গিয়েছি যেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে সেখানে সরকারের বা বাদশার সমালোচনা করা হয়েছে। তিনি নিজে এ ধরনের কোনো সমালোচনা করেছেন, এমন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সরকারের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। মিশর, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র বাদশা আব্দুল্লাহর প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে।