জর্জ বার্নার্ড শ’ : ঔপন্যাসিক, নাট্যকার

| শনিবার , ২ নভেম্বর, ২০২৪ at ৯:২০ পূর্বাহ্ণ

জর্জ বার্নার্ড শ’ (১৮৬৫১৯৫০)। তিনি ছিলেন একাধারে প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং ছোট গল্পকার। তিনি ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। আয়ারল্যাণ্ডের ডাবলিন শহরে তিনি ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ শে জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেথোডিস্ট চার্চ পরিচালিত ডাবলিনের একটি গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা। ডাবলিন ইংলিশ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল ডে স্কুলে তার প্রাতিষ্ঠানিক পড়ার সমাপ্তি ঘটে। ১৮৬৫ থেকে ১৮৭১ এর মাঝে শ চারটি স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং এর প্রত্যেকটিই তাকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি বিরূপ করে তোলে। পরবর্তীতে তিনি তার লেখায় স্কুলকে কারাগার এবং স্কুল শিক্ষককে কারাপরিদর্শক হিসেবে উপস্থাপনা করেছেন। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে তিনি বিদ্যালয়ের পাঠগ্রহণ বাদ দিয়ে ডাবলিনের একটি ভূমি প্রতিনিধির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কেরানি হিসেবে যোগদান করে। এই সময়ে শ ‘জর্জ শ’ নামে পরিচিত ছিলেন, ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের পর তিনি তার নাম থেকে ‘জর্জ’ অংশটি বাদ দেন এবং নিজেকে ‘বার্নার্ড শ’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিঙের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। যদিও তার পেশাগত লেখালেখির শুরু সঙ্গীত সাংবাদিকতা ও সাহিত্য সমালোচনার মাধ্যমে। কিন্তু তার প্রতিভার সম্পূর্ণ বিকাশ ঘটে নাটকে। জর্জ বার্নার্ড শয়ের একটি মহৎ গুণ ছিল, আর তা হলো সামাজিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যাগুলো হাস্যরসের ছদ্মাবরণে তিনি অত্যন্ত দক্ষ শিল্পীর হাতে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। শিক্ষা, বিযয়ে, ধর্ম, সরকার, স্বাস্থ্যসেবা এবং শ্রেণীসুবিধাই ছিল জর্জ বার্নার্ড শয়ের লেখার বিষয়বস্তু। অধিকাংশ লেখাতেই শ্রমজীবী মানুষের শোষণের বিপক্ষে তার অবস্থান ছিল সুস্পষ্ট।

শ’ ছিল একজন ভঙ্গিবিলাসী ও শুদ্ধবাদী; তিনি একইসাথে বুর্জোয়া এবং বুর্জোয়াবিরোধী লেখক ছিলেন, তিনি বর্তমান এবং উত্তর প্রজন্মের জন্য কাজ করে গেছেন; তার ধর্মতাত্ত্বিকতা বিনোদনদায়ক এবং তার সকৌতুক ছলনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত; তিনি সমাজতন্ত্রকে সমর্থন করতেন এবং ফ্যাসিবাদে প্রলুব্ধ হতেন। একজন কট্টর সমাজতান্ত্রিক হিসেবে ফ্যাবিয়ান সোসাইটির পক্ষে জর্জ বার্নার্ড শ’ অনেক বক্তৃতা দেন ও পুস্তিকা রচনা করেন। তিনি ‘ম্যান অ্যান্ড সুপারম্যান’ (১৯০২), ‘পিগম্যালিয়ন’ (১৯১২) ও ‘সেন্ট জোন’ (১৯২৩)-সহ ষাটের অধিক নাটক রচনা করেছেন। সমসাময়িক ব্যঙ্গরচনা থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক রূপক কাহিনি দিয়ে তিনি তার প্রজন্মের অন্যতম নাট্যকার হিসেবে প্রসিদ্ধি অর্জন করেন এবং ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। জর্জ বার্নার্ড শ’ ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২রা নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম শহরে রিক্সার দৌরাত্ম্য