প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে জয়ের সমান ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতি একাদশ। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩–৩ গোলে রুখে দিয়েছে বন্দর ক্রীড়া সমিতি একাদশ। প্রথমার্ধে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ে সে তিন গোল আবার শোধ করেছে বন্দর দল দ্বিতীয়ার্ধে। ফলে দুর্দান্ত এক ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অফিস দলটি। অপরদিকে তিন গোলে এগিয়ে থাকার পরও ম্যাচ জিততে না পারার হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে শিরোপা প্রত্যাশি ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। লিগে এটি টানা দ্বিতীয় ড্র ব্রাদার্সের। আগের ম্যাচে সিটি কর্পোরেশন একাদশের সাথে ড্র করেছিল ব্রাদার্স। এই ড্রয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচে ব্রাদার্সের সংগ্রহ ৮। হারিয়েছে ৭ পয়েন্ট। তাই বলা যায় শিরোপা দৌড় থেকে এক রকম ছিটকেই গেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
গতকাল বৃষ্টি ভেজা ভারী মাঠে দু’দলের খেলোয়াড়দের বাড়তি পরিশ্রম করে খেলতে হয়েছে। শুরু থেকেই আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণে বেশ জমে উঠে খেলা। যদিও লম্বা পাসে খেলার চেষ্টা করেছিল দু’দল। আর তাতেই সাফল্য পেয়ে যায় ব্রাদার্স ম্যাচের শুরুতে। ৪ মিনিটে বাম প্রান্তে বন্দর দলের ডি বঙের বাইরে ফ্রিকিক লাভ করে ব্রাদার্স। দিদারের নেওয়া কিকটি সরাসরি আশ্রয় নেয় জালে। এগিয়ে যায় ব্রাদার্স। ১৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো ব্রাদার্স। কিন্তু একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়ে ডি বক্সের ভেতর থেকে দিদার যে শট নেন তা চলে যায় সাইডবার ঘেষে। ৩৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাদার্স। বাম প্রান্তে বন্দর দলের রক্ষনভাগের ভুলে বল পেয়ে যান জুয়েল। দ্রুত এগিয়ে গিয়ে আগোয়ান গোল রক্ষকের পাশ দিয়ে তিনি বল পাঠান জালে। ব্যবধান দাড়ায় ২–০। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে ব্যবধান ৩–০ করে ব্রাদার্স। এবার ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ। ডি বক্সের ভেতর থেকে রোমানের মাইনাস। শট নিয়েছিলেন মিঠু। কিন্তু সে শট বন্দর দলের রক্ষণভাগের খেলোাড় রাফির মাথায় লেগে জড়ায় জালে। ৩–০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
তবে বিরতি থেকে ফিরে অণ্য এক বন্দর ক্রীড়া সমিতিকে দেখা গেল মাঠে। যদিও এই অর্ধেও প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল ব্রাদার্স। ডি বক্সের ভেতর থেকে সুজনের শট চলে যায় সাইডবার ঘেষে। এরপর শুরু হয় বন্দর ক্রীড়া সমিতি দলের তান্ডব। ৮ মিনিটে ব্যবধান কমান আরিফুল। ডি বক্সের সামনে থেকে আল আমিনের বাড়ানো বল ধরে কোনাকোনি শটে বল জালে জড়ান আরিফুল। ব্যবধান দাঁড়ায় ৩–১। কে জানতো এরপর আরো কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে ব্রাদার্সের জন্য। ২৮ মিনিটে ব্যবধান আরো কমায় বন্দর ক্রীড়া সমিতি। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে ডি বক্সের ভেতর থেকে সমৃদ্ধ নকরেক যে শট নেন তা ফিরে ক্রসবারে লেগে। এরপর ব্রাদাস ডি বক্সে বেশ কিছুক্ষণ বল ঘুরাঘুরি করে। শেষ পর্যন্ত রিফাত টোকা দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। ব্যবধান দাড়ায় ৩–২। ৩৬ মিনিটে ব্রাদার্সের জালে তৃতীয়বার বল প্রবেশ করান আরিফুল। এবার মাঝ মাঠ দিয়ে আক্রমনে উঠে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়ে দুর্দান্ত এক শটে ব্রাদার্সের জাল কাঁপান আরিফুল। তিন গোল শোধ করে তখন দারুণ উল্লসিত বন্দর শিবির। যদিও খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ানোর শেষ সুযোগটি পেয়েছিল ব্রাদার্স। ইনজুরি টাইমে ডি বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন ব্রাদার্সের মিঠু। কিন্তু বন্দর গোল রক্ষক আরো দক্ষতার সাথে সে বল কর্নারের বিনিময়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন। ফলে আবারো পয়েন্ট হারানোর হতাশা নিয়ে মাঠ চাড়তে হয় ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। আর জয়ের সমান ড্র নিয়ে স্বস্তিতে মাঠ ছাড়ে বন্দর ক্রীড়া সমিতি একাদশ। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বন্দর ক্রীড়া সমিতি একাদশের আরিফুল ইসলাম। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর জাফর ইকবাল।
আজকের ম্যাচে মাদারবাড়ি উদয়ন সংঘ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশ পরস্পরের মোকাবেলা করবে। খেলাটি শুরু হবে বিকেল সোয়া তিন টায়।