স্বস্তির কিংবা চাপ মুক্তির বা নিজেদের ফিরে পাওয়ার। যাই বলা হোক না কেন শ্রীলংকার বিপক্ষে জয়টা বাংলাদেশের জন্য এখন বড় অনুপ্রেরণা। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেলেও ঠিক মন ভরেনি সমর্থকদের। কারণ দলের প্রধান ভরসা যারা সেই ব্যাটাররা রানের খরা কাটাতে পারেনি। বিশেষ করে টপ অর্ডারের তিন তারকা সৌম্য, তানজিদ তামিম এবং অধিনায়ক শান্ত কোনো মতেই যেন রানে ফিরতে পারছে না। লিটন অবশ্য শুরু করেছে নিজেকে ফিরে পেতে। তারপরও জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে পারাটা অনেক বড় প্রাপ্তি। টানা চার ম্যাচে হারের পর চাপ মুক্তির জয়টা পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার জয়ের সে রথ সচল রাখার পালা। সে যাত্রায় আজ বাংলাদেশের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। যারা এরই মধ্যে টানা দুই ম্যাচে জিতে সুপার এইটের পথে এক পা দিয়েই রেখেছে। তাদের সঙ্গী হওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। সে কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে যদি আজ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারে টাইগাররা। প্রোটিয়ারা নিজেদের টানা দুই ম্যাচে জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তাই সে সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারলেই মিশন সফল হবে বাংলাদেশের। আর তাইতো সুপার এইট পর্বের পথে এগিয়ে যেতে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এখনো জয় পায়নি টাইগাররা। দু দলের আট মোকাবেলায় সবকটিতেই জয় প্রোটিয়াদের। তবে এবার হারের বৃত্ত ভাঙতে আত্মবিশ্বাসী শান্ত–সাকিবরা। এই ম্যাচের আগে আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে নিউইয়র্কের উইকেট। কারণ এই উইকেট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। উইকেটের উন্নতিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে আইসিসি। অবশ্য উইকেট মন্থর হলে সেখান থেকে বেশি সুবিধা পাবে বাংলাদেশই। বাংলাদেশের স্পিনাররা হয়তো সুবিধা নিতে পারবে। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন উইকেট যেমনই হোক না কেন আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে যে কোনো দলকে হারাতে পারি। তবে শান্তর স্বস্তির জায়গা হচ্ছে বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্স। ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফরমেন্স করছে দলের বোলাররা। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে বেশিরভাগ সময় ভেস্তে গেছে বোলারদের অর্জন। শান্ত বলেন বেশ কিছু দিন যাবতই আমাদের বোলাররা সেরা ফর্মে আছে। বিশ্বের যেকোনো ব্যাটিং লাইন আপকে ধসিয়ে দিতে পারে তারা। আগামী বছরগুলোতেও আমাদের বোলাররা সেটা ধরে রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ব্যাটিং উদ্বেগ থাকলেও খুব বেশি চিন্তিত নন টাইগার অধিনায়ক। তিনি বলেন, সব ব্যাটার এক সাথে জ্বলে উঠবে এমনটা আশা আপনি করতে পারেন না। কিন্তু এটাও সত্য, কাজ করার জায়গা আছে। আমরা আমাদের ব্যাটিং সমস্যা সমাধানের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি।
দক্ষিণ আফ্রিকা বরাবরই কঠিন এক দল। এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলংকাকে মাত্র ৭৭ রানে অল আউট করে দিয়েছিল। কিন্তু সে রান তুলতে ১৬.২ ওভার খেলতে হয়েছে তাদের। পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডকে ১০৩ রানে অল আউট করে দিয়েছিল। কিন্তু সে রান তুলতে ১৮.৫ ওভার খেলতে হয়েছে। সে সাথে হারাতে হয়েছে ৬ উইকেট। তবে প্রোটিয়া বোলাররা যে দারুণ ছন্দে রয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুই দলই বলতে গেলে বোলিংয়ে সেরা শক্তি। তবে দিন শেষে ব্যাটাররা যে দলের ভাল করবে জয়টা তাদেরই হবে। এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতলে তারা চলে যাবে সুপার এইট পর্বে। তখন অপেক্ষায় থাকতে হবে বাংলাদেশকে। অপরদিকে বাংলাদেশ জিতলে তারাও অনেকটাই চলে যাবে শেষ আটে। তখন পরের দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেই নিশ্চিত শেষ আট। তবে এতসব হিসেব নিকেষের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ চাইছে মাঠে সেরাটা দিতে। যদিও বরাবরই এমনটি চায় বাংলাদেশ। কিন্তু সব সময় সব চাওয়া পাওয়া হয় না টাইগারদের। নতুন ভেন্যু, নতুন ম্যাচ, নতুন প্রতিপক্ষ। তাই বাংলাদেশ চাইছে নতুন শুরুও। প্রথম ম্যাচের ভেন্যু ডালাস থেকে গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে নিউইয়র্কে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। জয়ের সুখানুভূতি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাই চনমনে এক বাংলাদেশ নামবে সেটা বলাই যায়।