জব্বারের বলীখেলা আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে কখনোই হারাতে দেওয়া যাবে না। আমরা ছোট বেলা থেকেই এই বলীখেলা দেখে আসছি। বৈশাখী মেলার সাথে আমরা পরিচিত। এই শহুরে জীবনেও জব্বারের বলী খেলার আবেদন এতটুকু কমেনি। এই বলীখেলার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। এটি একটি আন্দোলন। একটি সংগ্রাম। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন বদরপাতি এলাকার আবদুল জব্বার সওদাগর। মাঝখানে একবার বন্ধ হতে বসেছিল এই জব্বারের বলীখেলা। কিন্তু আমি উদ্যোগ নিয়ে আবার চালু করেছি। হারতে দেইনি। কাজেই আমরা চাই শুধু ১১৫ বছর নয় আরো শত শত বছর বেঁচে থাক এই বলী খেলা। জব্বারের বলী খেলার ট্রফি এবং জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলী সৃষ্টির জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। আর সে জন্য যা যা দরকার তিনি তা করবেন।
চট্টগ্রাম তথা সারা দেশের অন্যতম সেরা ঐতিহ্য আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৫ তম আসর বসছে আগামী ২৫ এপ্রিল। ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে বৈশাখী মেলা। বলী খেলাকে সফল করতে কার্যক্রম শুরু করেছে বলীখেলা এবং মেলা আয়োজক কমিটি। গতকাল উৎসবমুখর পরিবেশে নগরীর লালদীঘি পাড়স্থ সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এবারের বলী খেলার ট্রফি এবং জার্সি উন্মোচন করা হয়। সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে এই ট্রফি এবং জার্সি উম্মোচন করেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এবারের জব্বারের বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর। আবদুল জব্বার স্মৃতি বলীখেলা এবং বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, মেলা কমিটির সহ সভাপতি সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি হোল্ডিংসের প্রতিনিধি সরোয়ার আলম চৌধুরী মনি। অনুষ্ঠানে পাথরঘাটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রুমকি সেন গুপ্ত, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাবেদ নজরুল ইসলাম, এম এ মালেক, সিজেকেএস সহ সভাপতি হাফিজুর রহমানসহ মেলা এবং বলী খেলা আয়োজক কমিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এবারের বলী খেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর বলেন, আসলে জব্বারের এই বলী খেলা চট্টগ্রাম শুধু নয় সারা দেশের ঐতিহ্য। আর আমি একজন চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে এই বলী খেলাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে এগিয়ে এসেছি। আমরা চাই এই বলী খেলা চলতে থাকুক। আমরা এই বলী খেলা দেখে আসছি যখন থেকে আমাদের বুদ্ধি হয়েছে তখন থেকে। তাই এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। আর সে জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। তবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এই বলী খেলা অব্যাহত রাখতে। জব্বারের বলী খেলা একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে যাত্রা শুরু করলেও সেটি এখন এদেশের মানুষের কাছে বড় বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবেও পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বলী খেলার পাশাপাশি তিন দিন ব্যাপী যে বৈশাখী মেলা হয় সেটি এখন গৃহীনীদের কাছে সবচাইতে বড় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তাই এই বলী খেলার সাফল্যও কামনা করেন অতিথিবৃন্দ।