উন্নত বিশ্বে অনাগত, আগতসহ সকল শিশুকে স্বাগত জানানো হয় সরকারিভাবে। তাই ২/১ টা ব্যতিক্রম বাদে সকল শিশুই তাদের দেশে বাঞ্ছিত। তা সেই শিশু সাদা–কালো যা–ই হোক। শিশু‘র মা–বাবা‘র আর্থিক সঙ্গতি যা‘ই হোক না কেন, শিশুর সকল মৌলিক চাহিদার অধিকার সরকার নিশ্চিত করে থাকেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শিশুর যথাযথভাবে বেড়ে উঠায় মা–বাবার আর্থিক সক্ষমতা অনেক গুরুত্ববহ। এই ক্ষেত্রে একক পরিবারের চেয়ে যৌথ পরিবারে শিশু অনেক আনন্দের সাথে বেড়ে ওঠে, এবং সেই সাথে শিশুর সামাজিক ও পারিবারিক গুণাবলি অর্জিত হয়। শিশু পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব অনুধাবন করতে শিখে। এই ক্ষেত্রে মা–বাবা দু‘জনেই কর্মজীবী হলেও শিশুর পরিচর্যা খুব একটা ব্যাহত হয় না, শিশু তার দাদা–দাদী কিম্বা দাদু–দিদার সঙ্গসুখ লাভ করে সমৃদ্ধ হয়। এতদসত্বেও শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের বিকল্প নেই। এমন কি মায়ের মুখ থেকে শোনা ঘুমপাড়ানি গানও শিশুর মনে দারুণ ছাপ ফেলে যায়, যা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শিশুর মনে থাকে। শিশুর সাথে বন্ধু‘র মতো আচরণ করুন, এতে করে শিশু আপনার সঙ্গসুখ উপভোগ করবে এবং একজন মানবিক মানুষ হয়ে উঠবে। একটি ছোট গাছকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে গাছের চারপাশে বেড়া দিতে হয় এবং সোজা হয়ে উঠার জন্যে সাপোর্ট হিসেবে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করা হয়। গাছটি যথাযথ ভাবে বড় হয়ে গেলে, সেই গাছটি অনেককে সাপোর্ট করে থাকে। গরুর বাচ্চা জন্মের পর পরই গরু হয়ে উঠে কিন্তু মানুষের বাচ্চা, মানুষ হয়ে উঠতে অনেক বছর সময় লেগে যায়। জন্মের দায় তো শিশুর নয়, আসুন তাকে সস্নেহে বরণ করি। একজন মানুষ হতে পারে মনোহর রূপের অধিকারী, হতে পারে কদাকার, হতে পারে বিকলাঙ্গ বা পূর্ণাঙ্গ কিম্বা মানসিক প্রতিবন্ধী অথবা তৃতীয় লিঙ্গ –এসবের কোনটাইতেই তার হাত ছিলো না। আপনি নিজে যে ক্যাটাগরির অধিকারী হোন না কেন এতে অহংকার কিম্বা অন্যদের নিগৃহ করার কোনো অধিকার আপনার নেই। মনে রাখবেন সৃষ্টি মাত্রই সুন্দর তার স্রষ্টার কাছে, নিজে কিছু সৃষ্টি করুন তবেই এই অনুভব বুঝতে পারবেন। স্রস্টার সৃষ্টিকে ছোট করে দেখে সেই জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা একটি গর্হিত অপরাধ। মনের আকাশটাকে প্রসারিত করুন, আর তাতে প্রকৃতির সকল প্রাণীকে ডানা মেলে উড়তে দিন, নিজেকে সমৃদ্ধ করুন।












