যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলে আপনা থেকেই দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার যে প্রক্রিয়া আছে, তা বন্ধ করবেন বলে জানিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে শিশু অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া কাগজপত্রহীন কিছু অভিবাসীকে সহায়তা করতে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। সমপ্রচারমাধ্যম এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প একথা বলেন। গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর এটিই কোনও সমপ্রচারমাধ্যমে ট্রাম্পের প্রথম সাক্ষাৎকার।
গত রোববার প্রচারিত এই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অভিবাসন, জ্বালানি এবং অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারি করবেন বলে জানিয়েছেন। ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমা করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তাছাড়া, ইউক্রেইনকে সহায়তা দেওয়ার প্রসঙ্গেও ট্রাম্প কথা বলেছেন।
অভিবাসন প্রসঙ্গে ট্রাম্প এনবিসি–কে বলেন, তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তথাকথিত জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান বাতিলের চেষ্টা নেবেন। এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যে কেউ– তার বাবা–মায়ের জন্ম অন্য দেশে হওয়ার পরও– মার্কিন পাসপোর্ট অর্থাৎ, নাগরিকত্ব পেয়ে থাকে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই বিধান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে উদ্ধৃত আছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। খবর বিডিনিউজের।
তবে ট্রাম্প বলেন, এই নিয়ম বদলাতে হবে। নির্বাচনে কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও আবার ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এই অভিবাসীদেরকে তাদের পরিবারের সদস্যদের–সহ ফেরত পাঠানো হবে। আমি চাই না পরিবার ভেঙে যাক। সুতরাং, পরিবার ভাঙতে না চাইলে একমাত্র পথ হচ্ছে, তাদেরকে একসঙ্গে রাখা এবং সবাইকে একযোগে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
২০২১ সালে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িতদের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম দিনেই তিনি সেই দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমার দিকে নজর দেবেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে চলার সময় তাণ্ডব চালিয়েছিল ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল। সে সময় ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। তাদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। তাদের সঙ্গে দাঙ্গা–সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয়েছিল পাঁচজন।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি সেই দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত কয়েক শ’ জনকে ক্ষমা করতে চাইবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, আমরা আলাদাভাবে মামলাগুলো দেখব। হ্যাঁ, কিন্তু আমি খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেব। আর তা প্রথম দিনই। ওদিকে, ইউক্রেইন প্রসঙ্গে ট্রাম্প কিইভকে সহায়তা দেওয়া কমানো হতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।