জনবল সংকট, মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা

বান্দরবান সদর হাসপাতাল

বান্দরবান প্রতিনিধি | শনিবার , ৩ জুন, ২০২৩ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা মিলছে না দেড়শ শয্যায় উন্নীত সরকারি হাসপাতালে। দীর্ঘদিনেও চালু করা সম্ভব হয়নি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র আইসিইউ বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। তবে নির্মাণাধীন হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হলে দশ বেডের আইসিইউসহ সবধরনের প্রয়োজনীয় সেবা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, একশ পঞ্চাশ শয্যায় উন্নীত বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসকসহ আনুষাঙ্গিক জনবল রয়েছে এখনো ৫০ শয্যার সমমানের। বর্তমানে সদর হাসপাতালে কাগজে কলমে কর্মরত ২১ জন ডাক্তারের স্থলে রয়েছে ১১ জন চিকিৎসক। ডাক্তারের বাকী ১০টি পদ এখনো শূন্য। সিনিয়র স্টাফ নার্স ২২ জন, স্টাফ নার্স ৯ জন, সহকারী নার্স ৫ জন। নেই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং হেলথ এডুকেটর। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও হেলথ এডুকেটর না থাকায় বিভিন্ন ধরনের জটিল পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজগুলোও রোগীদের করাতে হচ্ছে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে।

রোগীর স্বজন মোহাম্মদ সোহেল ও কানিজ ফাতেমা অভিযোগ করে বলেন, গরীব, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষগুলোর ভরসা সরকারি হাসপাতাল। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। জটিল রোগগুলোর কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা বান্দরবান হাসপাতালে হচ্ছে না। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ডেলিভারি, ডায়রিয়া এবং দুর্ঘটনায় হতাহত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই উন্নত চিকিৎসার নামে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের নার্স ও স্টাফরা খারাপ আচরণ করছে রোগীদের সাথে। হাসপাতালের বাথরুম এবং রোগীদের কক্ষগুলো খুবই নোংরা। বিদ্যুৎ এবং খাবার পানির দুরবস্থা।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এস.এম উল্লাহ বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। রোগীদের বাড়তি কোনো চাপও নেই। বর্তমানে পুরুষ ওয়ার্ডে ৩৬ জন, শিশু ওয়ার্ডে ২২ জন এবং নারী ওয়ার্ডে ১১ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেশি নয়। রোগীদের প্রয়োজন মোতাবেক সরকারিভাবে সরবরাহ করা ওষুধ দেয়া হচ্ছে।

নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করে বান্দরবানের সিভিল সার্জন নিহার রঞ্জন নন্দী জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের বর্তমান অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। জনবল এবং লজিস্ট্রিক সংকটে রোগীদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, কথাটিও মিথ্যা নয়। চিকিৎসকদের নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বার বা জানুয়ারি মাসেই হাসপাতালের নতুন ভবনে কার্যক্রম চালু হবে। সেখানে দশ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র আইসিইউ বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট চালু করা হবে। একশ চৌদ্দটি তৃতীয় শ্রেণীর পদ শূন্য রয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগে, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সেগুলো পূরণে সর্বাত্মক চেষ্টা তদবির করা হচ্ছে মন্ত্রণালয়ে। নতুন ভবনে কার্যক্রম চালু হলে আধুনিক প্রয়োজনীয় অনেক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমও যুক্ত হবে হাসপাতালে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাড়ি ও পথচারীদের টার্গেট, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই
পরবর্তী নিবন্ধভণ্ড বৈদ্যের সংবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিক