ঝড় বৃষ্টি বা প্রখর রোদে তাদের বিশ্রাম নেই। যেকোনো পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয়। কিন্তু জনবল সংকটে চলছে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম। চাহিদার তুলনায় অর্ধেক জনবল নিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। এছাড়া জেলার তিনটি উপজেলায় নেই ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম। যার ফলে সড়কে নিত্যদিন লেগে থাকে যানজট। এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।
জানা যায়, কক্সবাজার বাস টার্মিনালে শতাধিক বাস যাতায়াতের ধারণক্ষমতা থাকলেও সেখানে প্রতিদিন ৯০টির বেশি পরিবহন কোম্পানির হাজারো দূরপাল্লার বাস যাতায়াত করে। এছাড়া শহরে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার টমটম, আড়াইশো ট্যুরিস্ট জিপ, অসংখ্য মোটরসাইকেল, সিএনজি, আটো রিকশা, মিশুকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এছাড়া রয়েছে পর্যটকবাহী গাড়ির বাড়তি চাপ। আছে এনজিও এবং ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের গাড়ি। তাই ব্যস্ততম এই জেলায় প্রয়োজন দুই শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু জেলা ট্রাফিক বিভাগে জনবল রয়েছে মাত্র ৫৯ জন। যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, শতাধিক জনবল হলে মোটামুটি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হিমশিম খেতে হতো না।
স্থানীয় পথচারী কলিম উল্লাহ বলেন, শহরে যে পরিমাণ ট্রাফিক পুলিশ আছে, তা পর্যাপ্ত না। কিছু পৌর কমিউনিটি পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকলেও তাদের শুধু শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্পের সামনে দেখা যায়। তারা যানজট নিরসনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন না।
শহরের শহীদ স্মরণী মোড়, বিমানবন্দর সড়ক মোড়, লালদীঘির পাড়, পেট্রোল পাম্প এলাকা, বাজারঘাটা, বার্মিজ মার্কেট, কালুর দোকান, খুরুশকুল রাস্তার মাথা, কলাতলী ডলফিন মোড়, কলাতলী ভাঙার মুখ, সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট, হলিডের মোড় ও ঝাউতলা এলাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত প্রায় যানজট লেগে থাকে। এছাড়া বাস টার্মিনাল ও লিংকরোড এলাকায় অতীতের চেয়ে বর্তমানে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখানকার অধিকাংশ স্পটে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত থাকে না। এতে প্রতিদিন ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রী ও সাধারণ মানুষ।
ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় মোট ৫৯ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। তার মধ্যে সার্জেন্ট রয়েছে মোট ৪ জন। তারা দুই শিফটে দায়িত্ব পালন করেন। গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন মোড়গুলোতে প্রতিদিন ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কাজ করছে। জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়ায় নেই ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাস টার্মিনালে প্রতিদিন হাজারো বাস ও গণপরিবহন আসা যাওয়া করে। শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কের অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, সবকিছু সামাল দিতে হচ্ছে। আমাদের জনবল রয়েছে মাত্র ৫৯ জন। কিন্তু দরকার এরচেয়ে দ্বিগুণ। তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানোর।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পর্যটন শহরে যানবাহনের চাপ বেশি। ট্রাফিক বিভাগে জনবল বাড়ানোর আমরা চেষ্টা করছি।









