বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ার কোনো কারণ দেখছেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অংশগ্রহণটা কার অংশগ্রহণ। আমার কাছে অংশগ্রহণটা জনগণের অংশগ্রহণ। জনগণ ভোট দেবে, সেই ভোটে যারা নির্বাচিত হবে, জয়ী হবে, তারা সরকারে আসবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় পঞ্চদশ ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকারপ্রধান। সেখানেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার আসামি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদের বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনবিদ পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, এবারই ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে হবে এমন কোনো চেষ্টা বাংলাদেশের ছিল না এবং বাংলাদেশ কাউকে সেটা বলেওনি। চাইলে পাব না সেই অবস্থাটা আর নাই। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে এবং ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে সরকার কী উদ্যোগ নেবে তা জানতে চান একজন সাংবাদিক। খবর বিডিনিউজের।
উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, এখন অংশগ্রহণ বলতে কাদের অংশগ্রহণ? ভোট চোরদের? ভোট ডাকাতদের? দুর্নীতিবাজ, মানিলন্ডারিং, খুনি, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, জাতির পিতার হত্যাকারী, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, তাদের অংশগ্রহণ? এটা কি জনগণ চায়? তারা (বিএনপি) অংশগ্রহণ করলেই বৈধ হবে, অন্য কেউ করলে হবে না, এটা তো হতে পারে না। তাদের প্রতি মানুষের ঘৃণা, এটা মাথায় রাখতে হবে।
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের সময়ে সব নির্বাচনেই ‘জনগণ অংশগ্রহণ করছে’ মন্তব্য করে দলের সভাপতি বলেন, তা না হলে ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি তো ৩০টা আসন পেয়েছিল। তারপর থেকে আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। তারা বাণিজ্য করে নমিনেশন বেচে। হয়ত তারা আসবে, নমিনেশন বেচবে, বাণিজ্য করবে। কিছু টাকা নয়াপল্টন অফিস পাবে, কিছু টাকা গুলশান অফিস পাবে, আর মোটা অংক যাবে লন্ডনে। এই তো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে! তারপর নিজেরাই মারামারি করবে। পরে নির্বাচন উইথড্রো করবে। সব নির্বাচনেই জনগণ অংশগ্রহণ করেছে।
নির্বাচনী ডামাঢোলের মধ্যে সিঙ্গাপুরে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি নেতাদের কথিত বৈঠকের বিষয়ে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কয়টা নির্বাচন এই পর্যন্ত হয়ে গেল, সেটাতে কি জনগণ নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ করতে পারেনি? হ্যাঁ, কেউ কেউ চেষ্টা করেছে, সেখানে নিজেরাই একটা গোলমাল সৃষ্টি করে সেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার, কিন্তু সেটাতে সফল হয়নি। যেহেতু জনগণ ভোটে গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, এখন দেশে জায়গা না পেয়ে বিদেশে গিয়ে কার শিং গজাল, সেটা তো আমি খোঁজ নিতে পারব না। বলে যে সিঙ্গাপুর, আমি বললাম যে, কোথায় যেয়ে কার শিং গজাল, সেটা আমি দেখব কোত্থেকে বলেন? তারা কোথাও শিং ধার করতে গেছে নাকি, যে গুঁতা টুতা মারবে, বাংলাদেশের জনগণকে ইলেকশন করতে দেবে না।
প্রশ্নকর্তার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনি বলছেন যে গোয়েন্দা সংস্থার খোঁজ নিতে হবে। এটা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করব কে গেল, কে কোথায় গেল, কী করল? ওটা নিয়ে আমি চিন্তা করি না। শিং নাই তবু সিংহ। ওই নিয়ে চিন্তার কী আছে?
ইউনূসের জন্য বিবৃতি না দিয়ে আইনজীবী পাঠান : শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার আসামি মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদের বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনবিদ পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার খুব অবাক লাগছে, ভদ্রলোকের যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকত, যে তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তাছাড়া আমাদের দেশে সবকিছু একটা আইনমতো চলে। কেউ যদি ট্যাঙ না দেয়, আর যদি শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শ্রম আদালতে যদি মামলা করা হয়, সেখানে আমাদের কি হাত আছে? আমরা মামলা বন্ধ করে দেব? আপনারাই বিচার করেন।
সরকার যে শ্রম আদালতের ওই মামলা করেনি, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা চলমান মামলা, আমাদের দেশে তো চলমান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। কারণ এটা বিচারাধীন। যেখানে বিচারাধীন হিসেবে নিজের দেশেই কথা বলা বন্ধ করা হয়। সেখানে বাইরের দেশ থেকে বিবৃতি এনে মামলা প্রত্যাহারের কথা, আমি কে মামলা প্রত্যাহারের? এখানে আমার কোন অধিকারটা আছে, সেই অধিকারটা দিয়েছেন আমাকে? জুডিশিয়ারি তো সম্পূর্ণ স্বাধীন। একটা দেশে জুডিশিয়ারি, লেজিসলেটিভ এবং এঙিকিউটিভ তিনটা অঙ্গ একসঙ্গে চলে। কিন্তু একটা আরেকটার প্রতি হস্তক্ষেপ আমরা করতে পারি না।
ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এই বিবৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে আমি আহ্বান করি, তারা এঙপার্ট পাঠাক। তাদের যদি এত দরদ থাকে তারা আইনজীবী পাঠাক এবং যার বিরুদ্ধে মামলা তার সমস্ত দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখুক। তারাই এসে দেখুক কোনো অন্যায় আছে কিনা। বিবৃতি দিয়ে কীভাবে একটা মামলা তোলে, তা তো আমরা জানি না। কিন্তু তাদের এসে দেখা দরকার এখানে কি কি অসঙ্গতি আছে, অসামঞ্জস্যতা আছে।
ইউনূসের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে দুইশর মতো মামলা রয়েছে বলে তার আইনজীবী আবদুল্লাহ–আল–মামুন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শ্রমিকদের জন্য জন্য তো আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বে শুধু নালিশ আর নাশিল। এই দেশের কোম্পানি আইনে আছে, প্রফিটের শতকরা পাঁচ ভাগ লেবার ওয়েলফেয়ারে দিতে হবে। এখন যদি কেউ না দেয়, লেবাররা মামলা করে, মামলা করার ফলে তাদের ছাঁটাই করা হয়, তারা যদি আবার মামলা করে, সে দায়িত্ব তো আমাদের না। আবার এই মামলা যাতে না হয়, তার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। সেই ঘুষের টাকা পর্যন্ত যাওয়া, সেই নেতারা যে ঘুষ খেয়েছে সেই টাকা ব্যাংকে ফ্রিজ করা…।
পৃথিবীর কোনো দেশে কর ফাঁকি দিলে ছাড় দেওয়া হয় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে ট্যাঙ ফাঁকিতে যদি কেউ ধরা পড়ে, তাকে তো সেই ট্যাঙ ফেরত দিতে হবে, কিছু কিছু ফেরত দিয়েছেও। এনবিআর থেকে যেটা বলা হয়েছে, পাঁচ হাজার কোটিই, উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেগুলো স্থগিত হয়ে আছে। স্বাভাবিকভাবেই সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক একটা চাপ, যেখানে সরকারের অর্থ পাওনা, সেখান থেকে তো অর্থ আদায় করতেই হবে। যারা ট্যাঙ দেয় না এনবিআর তাদের অর্থ ছাড়বে কেন? ট্যাঙ দেওয়া তো সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যদি আপনার বিদেশে, আমেরিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন, কেউ যদি তাদের দেশের ট্যাঙ ফাঁকি দেয়, তাদেরকে কি কোলে তুলে নাচে তাদের সরকার? না তাদের মামলা দেয়।
বিশ্বে ‘বহু নোবেলজয়ীকে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য জেলে যেতে হয়েছে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলে, ফিলিপাইনের নোবেলজয়ী, তার বিরুদ্ধে ট্যাঙ ফাঁকি দেওয়ার মামলায় দিনের পর দিন, সেই মামলা তাকে চালাতে হয়েছে। এইরকম বহু নোবেলজয়ী আছে, তারা কারাগারে বন্দিও আছে পরবর্তীতে অনেক কাজের জন্য। এখন একজনের জন্য এত এত বিবৃতি না দিয়ে তারা একটা এঙপার্ট পাঠিয়ে দেখুক। বিশেষজ্ঞা পাঠালে আরও অনেক কিছু বেরিয়ে আসতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি মনে করি তারা যদি একবার পাঠায় তাহলে আরও অনেক কিছু বের হবে, যেটা আমরা হাতই দিইনি।
ইউনূস ছিলেন সরকারি মালিকানার একটি ব্যাংকের এমডি, সেই পদে থেকে তিনি কী করে বিদেশে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করলেন, সেই প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারি বেতনভোগী একজন এমডি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কীভাবে ইনভেষ্ট করে? বাণিজ্য করে? এই যে শত ইন্টেলেকচুয়াল যারা বিবৃতি দিলেন, তারা কি জিজ্ঞাসা করেছেন, একটি ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় কীভাবে বিদেশে এত টাকা বিনিয়োগ করলেন। ব্যবসা করলেন, আসা–যাওয়া করেন, এত কিছু করেন কোনো নিয়ম নাই। কোথা থেকে টাকাটা এল, কীভাবে টাকাটা উপার্জন করা হলো, সে কথা সাংবাদিকরা কখনো ইউনূসকে জিজ্ঞাসা করেছেন কিনা, সেই প্রশ্নও তোলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের একজন রাজনীতিবিদ করলে লিখতে লিখতে কলম শেষ হয়ে যেত। দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, দুর্নীতিবাজ পছন্দ না হলে কোনো দোষ নাই, আর পছন্দ হলে তারে ভালো করে আচ্ছা মতো, এটা অবস্থান আপনাদের?
চাইলে পাব না সেই অবস্থাটা আর নাই : প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এবারই ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে হবে এমন কোনো চেষ্টা বাংলাদেশের ছিল না এবং বাংলাদেশ কাউকে সেটা বলেওনি। চাইলে পাব না সেই অবস্থাটা আর নাই। কিন্তু প্রত্যেক কাজটারই একটা নিয়ম থাকে, আমরা সেই নিয়ম মেনেই চলি।
এবারের সম্মেলনের আগে বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার আবেদনের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর আগে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা বলেছিলেন। সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত ৬ দেশকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ সেই তালিকায় নেই, যা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপি বিষয়টিকে বর্ণনা করেছে সরকারের ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী গত জুনে তার ইতালি সফরের সময় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেওয়ার আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হলো, তখন আমন্ত্রণ জানালেন, ব্রিকস সম্মেলন করবে, আমাকে আসতে বললেন এবং সে সময় আমাকে জানালেন যে, তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেনও এবং সেটাতে আমার মতামত জানতে চাইলেন। আমি বললাম যে, এটা খুবই ভালো হবে। কারণ ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে এই পাঁচটা দেশের সরকারের প্রধানের সঙ্গে আমার যোগাযোগ সবসময় ছিল এবং আছে।
তিনি বলেন, ব্রিকসের সদস্য হওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট আমাকে তখনই বলেছিলেন যে, ধাপে ধাপে নেবেন, তারা ওই ভৌগোলিক অবস্থানকে বিবেচনা করে যে দেশগুলি তাদেরকে নেবেন এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে তারা সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন। আমরা ঠিক ওইভাবে, হ্যাঁ, নিলে আমরা খুব খুশি। কিন্তু আমরা ঠিক ওইভাবে ব্রিকসে এখনই সদস্যপদ পাব, এই প্রথমবারই যে সদস্যপদ পাব, এ ধরনের চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না, আর সেই রকম চেষ্টাও কিন্তু আমরা করিও নাই বা কাউকে আমরা বলিও নাই।
ব্রাজিল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কিন্তু কাউকে কিছু বলতে যাইনি যে, এখনি মেম্বার করেন। তখন থেকে আমরা জানি যে তারা কয়েকটা দেশ নেবেন।
বিরোধীদলের সমালোচনার জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি, এই ইস্যুটা আসবে বা আমাদের অপজিশান থেকে খুব হুতাশ, যে আমরা নাকি চেয়েছি, পাইনি, হেনতেন। বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না এটা কিন্তু ঠিক না। অন্তত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের যে মর্যাদাটা আমরা তুলে ধরেছি, সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে।
তিনি বলেন, তারা বলতে পারে, কারণ তারা বিএনপির আমলে ওইটাই ছিল। বাংলাদেশের কোনো অবস্থানই ছিল না সারা বিশ্বে। বাংলাদেশ মানেই ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, বন্যার দেশ, হাত পেতে চলার দেশ, ভিক্ষা চাওয়ার দেশ। এখন অন্তত বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ না, এটা সবাই জানে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্রিকস জোটের অধীনে গঠিত নিউ ডেভেলপমন্টে ব্যাংকে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ শুরু থেকেই বাংলাদেশের ছিল এবং বাংলাদেশ ওই ব্যাংকের সদস্য হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যখন শুনলাম যে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হচ্ছে, ওটার উপরে আমাদের আগ্রহটা বেশি ছিল, সেখানে আমরা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম।
ওই ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে দুটি প্রকল্প চালু থাকার কথাও আরেক প্রশ্নে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট মুদ্রার বাধাধরা না কথাও তিনি বলেন।
নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে : নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত সিদ্ধান্ত, বিভাজনের নীতিকে না বলার এখনই সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলার উপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত কৃত্রিম সিদ্ধান্তের কারণে আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে রাজি নই।
সফরের মূল আলোচনার বাইরে ইন্দোনেশিয়া, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই সফরটা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল বাংলাদেশের জন্য। যখন সারা বিশ্ব স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশনের নামে নানা ঝামেলায়, সেখানে একটা নতুন দুয়ার খুলে গেছে আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য সবকিছু সম্প্রসারণ করার জন্য সেটাই আমি মনে করি।