১৯৭১ সালের দিনটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫২তম জন্মদিন ছিল। এদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে গিয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানায়। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত বাংলার অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিনে শেখ মুজিব সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়। এদিন বৈঠক প্রায় এক ঘণ্টব্যাপী চলে। প্রথম দিনের মতোই আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু বলেন, আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। তবে আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে। বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনে পৌঁছালে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি তাদের সাথে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন। ৫২তম জন্মদিনে তার কি কামনা বিদেশি সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি। আমি জনগণের একজন। আমার জন্মদিনই কি, আর মৃত্যুদিনই কি! জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে আমাদের সকলের মৃত্যু হতে পারে।
সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, পূর্ব বাংলা এখন স্বাধীন, সাড়ে সাতকোটি বাঙালি এখন স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, আমার ৮৯ বছরের অতীতের সবকটি আন্দোলনের সাথে আমি জড়িত ছিলাম; কিন্তু একটি সর্বজনীন দাবিতে জনগণের মধ্যে বর্তমান সময়ের মতো একাগ্রতা ও সহযোগিতা আমি এর আগে আর কখনো দেখিনি।