চট্টগ্রামের নগরীর জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে ‘ইসলামিক গান’ গাওয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, ‘সারদীয় দুর্গাপূজায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে ধারা বহমান চট্টগ্রাম সেটির নেতৃত্ব দিবে। মণ্ডপে যারা ইসলামিক গান গেয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, এমন কাণ্ডে জড়িতদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মামলার মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হলে দুর্গাপূজার মণ্ডপে ‘চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি’ নামের একটি সংগঠনের ছয় সদস্য মঞ্চে দুটি গান পরিবেশন করেন। শুরুতে তারা একটি ‘ইসলামী গান’ পরিবেশন করেন। পরে একটি দেশাত্মবোধক গান গেয়ে তারা মঞ্চ ছাড়েন।
‘ইসলামী গান’ পরিবেশনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই সমালোচনামুখর হয়ে ওঠেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই তাদের একটি দল পূজামণ্ডপে গান করতে গিয়েছিলো। পূজা উদযাপন পরিষদের সজল বাবু আমাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দুটি সম্প্রীতির গান করে। জোরপূর্বক গান করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।’
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ১২টার দিকে পূজা উদযাপন পরিষদের দুই পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। অনেকে বিক্ষোভও করে। পরিস্থিতি সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মণ্ডপের আশেপাশে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের অনুমতি নিয়ে ওই গানের দলটি পূজা মণ্ডপে এসে গান পরিবেশ করেছে বলে জেনেছি। তবে ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’ সংগঠনটি জামায়াতের কিনা এমন প্রশ্নে হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার জানা নেই।’
চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও প্রচার বিভাগের পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কয়েকটি ছেলে মণ্ডপে গিয়ে সম্প্রতির গান গেয়েছে শোনলাম। তবে এদের সাথে জামায়াত শিবিরের কোন সম্পৃক্ততা নেই।’
এদিকে মণ্ডপে গান গাওয়া এই তরুণদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এরমধ্যে তাঁদেরকে গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশের বিশেষ একটি ইউনিট। এছাড়াও তাদেরকে গানের দাওয়াত দেওয়া সজল দত্তকে পূজা উদযাপন পরিষদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।