‘জঙ্গি ছিনতাইয়ে যোগাযোগকারী ছিলেন পলাতক সোহেলের স্ত্রী শিখা’

| রবিবার , ৯ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

মাস পাঁচেক আগে ঢাকার আদালতপাড়া থেকে যে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তাদের একজনের স্ত্রী শিখা ওই ঘটনায় যোগাযোগকারীর দায়িত্বে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সক্রাইম ইউনিটসিটিটিসি। শিখাসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গি বর্তমানে দেশের ভেতরেই আছে বলে ধারণার কথা জানায় সিটিটিসি। শুক্রবার রাতে পলাতক জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখাকে (৩১) নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আশ্রয়দাতা হিসেবে ধরা হয় হুসনা আক্তার ওরফে হুসনাকে (২২), যিনিও এক জঙ্গির স্ত্রী বলে সিটিটিসির ভাষ্য। খবর বিডিনিউজের।

সংস্থাটির কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, জঙ্গি ছিনতাইয়ের দিন শিখা তার বাবার সাথে আদালতে এসেছিলেন। তিনি বন্দি জঙ্গি এবং বাইরে থাকা সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করছিলেন। এক পর্যায়ে কৌশলে বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তিনি। জঙ্গি কার্যক্রমে শিখার সম্পৃক্ততার বর্ণনা দিতে গিয়ে সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) থেকে বিএসসি ডিগ্রি নেওয়া শিখা তারই ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমনের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের আদর্শে উদ্ধুদ্ধ হন। পরবর্তীতে সাইমন তার বোনকে সোহেলের সাথে বিয়ে দেয়। আসাদুজ্জামান বলেন, সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার সদস্য থাকাকালে বিয়ে হওয়ার পর স্বামীর সাথে আরো গভীরভাবে সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়েন শিখা। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিত রায়, দীপন ও নীলাদ্রী নিলয় হত্যা মামলার আসামি হিসাবে সোহেল গ্রেপ্তার হলে বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপের মাধ্যমে স্বামীর সাথে যোগাযোগ রাখত। স্বামীর নির্দেশনা অনুযায়ী শিখা আনসার আল ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলে বলে জানান সিটিটিসি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।

২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আনসার আল ইসলাম সদস্য মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এ সময় আসামি আরাফাত ও সবুর নামে আরও দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করলেও পরে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর ছিনতাই ঘটনার তিন দিন পর ‘আনসার আল ইসলামের সদস্য’ মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফিকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি দাবি করেছিল, তিনি এ ঘটনার প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। জঙ্গি ছিনতাইয়ে শিখা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেয় জানিয়ে গতকাল অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, ছয় মাস আগে থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে তারা। এর অংশ হিসাবে রাজধানীর আশেপাশের জেলায় একাধিক বাসা ভাড়া নিয়ে ওইসব বাসায় ঘন ঘন বৈঠক করেন আনসার আল ইসলামের নেতারা। এসব বৈঠকেই কারাগার হতে আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ নভেম্বর যারা আদালতে হাজিরা দিতে আসবেন, তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার মধ্যস্থতাকারী হিসাবে শিখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসবাইকে ভোটে আনার দায়িত্ব সরকারের নয়, ইসির
পরবর্তী নিবন্ধসরকার পদত্যাগ করে সংলাপে ডাকলে সাড়া দেবে বিএনপি : ফখরুল