৬ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হয় ১১ তলা ভবন। অপর একটি ৬ তলা ভবনের অনুমোদনের বিপরীতে নির্মাণ করা হয় ৮ তলা ভবন। প্রচলিত নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করার অপরাধে আগ্রাবাদের হোটেল ইস্টার্ণ ভিউর মালিক জসিমউদ্দিন ভুঁইয়া এবং তার স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আদালতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মহিলাকে ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করায় কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন মালিকদের কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ প্রদান করেন।
সিডিএ সূত্র জানায়, নগরীর আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের চৌমুহনী এলাকায় দুটি পৃথক প্লটে ভবন নির্মাণের জন্য অনুমোদন নেয়া হয়। দুটি প্লটের জন্যই ছয় তলা করে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু ভূমি মালিকরা ভবন নির্মাণের সময় একটিতে ছয় তলার পরিবর্তে ১১ তলা এবং অপরটিতে ছয় তলার পরিবর্তে ৮ তলা ভবন নির্মাণ করেন। ছয় তলা অনুমোদনের বিপরীতে ৮ তলা ভবন নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা জনৈক মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন সিডিএ আদালতে অভিযোগ করলে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নম্বর ১৯/২০। এই মামলায় ভবন মালিক জসিমউদ্দিন ভুঁইয়া, তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম, তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মোজাম্মেল হোসেন এবং তার স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমকে আসামি করা হয়। অপরদিকে স্থানীয় রোকেয়া বেগম নামের একজন বাসিন্দা ছয় তলার অনুমোদন নিয়ে ১১ তলা ভবন নির্মাণের ব্যাপারেও সিডিএ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। এতে জসিমউদ্দিন ভুঁইয়া এবং তার স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে আসামি করে ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা নম্বর ২১/ ২০ রুজু করা হয়।
সিডিএ আদালত অথরাইজেশন বিভাগ-২ এর আওতায় মামলা দুটির কার্যক্রম শুরু করেন। শুনানিকালে মামলা নম্বর ১৯/২০ এর আসামি হিসেবে মোজাম্মেলন হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রদান করা হয়। গতকাল ওই মামলায় মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া এবং তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামি মোজাম্মেল হোসেন আদালতে ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে মর্মে ছবি দাখিল করেন জামিন বহাল রাখার আবেদন জানান। সিডিএ আদালত মোজাম্মেল হোসেনের জামিন বহাল রেখে ভবনটি ভেঙে ফেলে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন। এই মামলায় মোজাম্মেল হোসেনের স্ত্রী হুসনেআরা বেগম পলাতক রয়েছেন।
ছয় তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে ১১ তলা ভবন নির্মাণের মামলা নম্বর ২১/২০ এর আসামি মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলারও নির্দেশ প্রদান করা হয়। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিডিএ স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফয়েজ আহমদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আদালত মামলা দুটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। গতকাল তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।