ছেলে হত্যার বিচার চাওয়ায় পিতাকে হত্যা

ফটিকছড়ির জোড়া খুন, আটক ৩

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২২ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়িতে প্রথমে ছেলেকে হত্যার পর মরদেহ খালে ফেলে দেওয়া হয়। ছেলে হত্যার বিচার চাওয়ায় নয় মাসের মাথায় বৃদ্ধ পিতাকেও একই কায়দায় হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আবার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে জোড়া খুনের দায় চাপানো হয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের উপর। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না অপরাধীদের। এই জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।
আটককৃতরা হলেন, ফিরোজ মিয়া (৩৮), সালাউদ্দিন (২৮), একলাছ মিয়া (৩৮)। গ্রেপ্তার সালাউদ্দিন প্রকাশ মন্নান গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া ফিরোজ এবং এখলাছের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার পিবিআইয়ের ১৮ ঘণ্টার অভিযানে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটকের পর বের হয়ে আসে পিতা-পুত্রের খুনের রহস্য। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি এলাকার খামারে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর এলাকার বাসিন্দা ফকির আহমদ। পরদিন দুর্গম এ অঞ্চলের দুধ্যাছড়ি খাল থেকে গলাকাটা অবস্থায় ফকির আহমদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা এজাহার মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পাহাড়ি সন্ত্রাসীরাই ফকির আহমেদকে হত্যা করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় থানা পুলিশের তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু বাদী এজাহার মিয়া তদন্তে গতি আনার চেষ্টা করলে চলতি বছরের ২৫ জুন একইভাবে বাবাকেও হত্যা করা হয়।
মাত্র ৬ দিন আগে এজাহার মিয়া হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আর এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বের হয়ে আসে পিতা-পুত্রের জোড়া খুন একই সূত্রে গাঁথা। আর এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই কর্মকর্তা কামাল আব্বাস।
সূত্র জানায়, আটকের পর পরই তিনজনের মধ্যে দু’জন স্বীকার করে, ফকির আহমেদ খামার এলাকায় অন্যদের গরু চরাতে না দেওয়ায় ফিরোজ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ভাড়াটিয়া খুনিদের দিয়ে প্রথমে ফকির আহমেদকে হত্যা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এ হত্যাকাণ্ডে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তারা বৃদ্ধ এজাহার মিয়াকেও হত্যা করে। দুটি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আটক ফিরোজ মিয়া হলেও এর সঙ্গে কিলিং মিশনে অন্তত ৮ জন ছিল বলে নিশ্চিত হয়েছে পিবিআই। দু’টি মামলারই তদন্তভার পাওয়ার পর বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সংস্থার কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেকর্ড গড়া জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধসাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি