ছেলে শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে রাজশাহীর একজন স্কুল শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। পুলিশের সংস্থাটি জানায়, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বৈশ্বিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তাদের সহযোগিতার সম্পর্ক আছে। গ্রেপ্তার করা শিক্ষকের বিষয়ে তাদের কাছ থেকেই তথ্য পাওয়া যায়। এরপর ভুক্তভোগী ও তাদের অভিভাবকদের বক্তব্য পেয়ে ধরা হয় তাকে। খবর বিডিনিউজের।
গত শনিবার রাজশাহী মহানগর মতিহার থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ৩৩ বছর বয়সী সেই শিক্ষক, যিনি কাটাখালী উপজেলায় একটি স্কুলে পড়ান। এর আগে একটি কোচিং সেন্টারেও পড়াতেন। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানায়, ১০ বছরের কম বয়সি ছাত্রদের মোবাইলে গেম খেলার সুযোগ করে দিয়ে নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে তা ভিডিও করে রাখতেন সেই শিক্ষক। এভাবে অন্তত ৩০টি শিশুর সঙ্গে যৌনাচার করে তা ভিডিও করে রাখেন তিনি। তার মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে যেখানে বিপুল পরিমাণ নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং শিশু পর্নোগ্রাফির কন্টেন্ট পাওয়া যায়।
সিআইডি জানায়, বিশ্বে শিশু নিপীড়ন প্রতিরোধে এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট ইউনিটসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন, গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের কারণে তারা শিশু নিপীড়ন সংক্রান্ত তথ্য পেয়ে থাকে। সেই শিক্ষকের বিষয়ে একটি তথ্য পেয়ে সিআইডির ‘ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স টিম’ তদন্ত শুরু করে। এরপর তাকে শনাক্তের পর তার বিষয়ে অনেক ছাত্র এবং অভিভাবকের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায়। এরপরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, ছাত্রাবস্থায় এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি। তখন থেকেই কম বয়সী ছাত্রদেরকে চকলেট এবং মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরে শিশুদের ফুসলিয়ে তার কোচিং সেন্টার বা বাড়িতে, কখনো কখনো আশেপাশের আম–লিচু বাগানে নিয়ে যৌনাচার করতেন।
যৌন নিপীড়নের শিকার সবাই তার ছাত্র উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তারের পর সেই শিক্ষক জানিয়েছেন, অন্তত ৩০ জন ছাত্র তার দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এই কাজ করতেই ছেলেদের জন্য আলাদা একটি কোচিং সেন্টারও চালু করেছিলেন তিনি। এই ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।