গত ৮/৯ মাস আগে সংঘটিত একটি ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই ছাত্রলীগ নেতা ইমন হাসান মাওলাকে হত্যা করে খুনিরা। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে খুনিরা গত ২/৩ মাস আগেই ছুরি ও চাপাতি সংগ্রহ করে অপেক্ষায় ছিল সুযোগের। গত ২১ জুলাই রাতে শহরের বাঁকখালী নদীর পেশকারপাড়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধের কাছে ইমনকে একা পেয়ে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে খুনিরা।
ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবদুল্লাহ খানকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব-১৫ এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ বিল্লাল উদ্দিন গতকাল রোববার বিকালে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এর আগে গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফের কচুবনিয়া এলাকা থেকে তাকে ছিনতাইকৃত সেই মোটর সাইকেলসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫। সে কক্সবাজার পৌরসভার পেশকারপাড়া ৪ নং ওয়ার্ডের খাইর আহমদের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে এএসপি মোঃ বিল্লাল উদ্দিন আরো বলেন, কক্সবাজার শহরে ইমন হাসান মাওলার পিতার একটি দোকান রয়েছে। গতবছর সেই দোকানে ইমনের পিতার সাথে আব্দুল্লাহ খান গং এর বাকবিতন্ডা হয়। পরে এর জের ধরে ইমন ও আব্দুল্লাহ খানের সহযোগীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটলে আব্দুল্লাহ খান গং ইমন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর থানায় মামলা করে। পরে ওই মারামারির ঘটনার প্রতিশোধ নিতে আব্দুল্লাহ খান সুযোগ খুঁজতে থাকে এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২১ জুলাই রাতে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে। হত্যাকাণ্ডে আব্দুল্লাহ খান এবং তার সহযোগীরা ১ টি চাপাতি ও ১ টি ছুরি ব্যবহার করে। ব্যবহৃত ছুরি এবং চাপাতিটি ইমনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গত ২/৩ মাস পূর্বে আব্দুল্লাহ খান ও তার আরেক সহযোগীর হেফাজতে ছিল। ঘটনার পর ইমনের মোটর সাইকেলটি নিয়ে চম্পট দেয় প্রধান আসামি আবদুল্লাহ খান।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা ইমন হাসান মাওলা তার পিতার মোটর সাইকেল নিয়ে পেশকার পাড়ার বাঁকখালী নদীর সিকো বরফ কল পয়েন্টে ঘুরতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে ছুরিকাহত হন। ইমনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পথচারীরা গুরুতর আহত অবস্থায় ইমনকে উদ্ধার করে প্রথমে কঙবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। শনিবার সকালে নামাজে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। ইমনের পিতা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাছান বাদি হয়ে আবদুল্লাহ খানকে প্রধান আসামি করে শনিবার রাতে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৮ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ওয়াসিম ও মিজান নামের আরো দুইজনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান কঙবাজার সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত সেলিম উদ্দিন।












