ছুরিকাঘাতে যুবক খুন, মৃত্যুর সাথে লড়ছে ছোট ভাইও

আমবাগানে পূর্ব শত্রুতার জের

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আমবাগানে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে হানিফ (২২) নামের এক যুবক। একই ঘটনায় তার ছোট ভাই অনিক (১৯) মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকাল সোমবার বিকেলে আমবাগান তরুণ সংঘ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করেছে খুলশী থানা পুলিশ। মূল হামলাকারী ভাঙারি সোহেল ঘটনার পর থেকে পলাতক, তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুজ্জামান। নিহত হানিফ ওই এলাকার আলাউদ্দীনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, নিহত হানিফের পরিবারের সাথে পূর্ব শত্রুতা ছিল হামলাকারী ভাঙারি সোহেলের পরিবারের। দুইদিন আগে ফারুক নামের এক ব্যক্তি বেড়াতে গিয়ে সিএনজি করে আমবাগানের বাসায় ফেরেন। এসময় সিএনজির ভাড়া নিয়ে ফারুকের সাথে চালকের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় দূরে দাঁড়িয়ে ভাঙারি সোহেল চালককে বলেন, ‘ওরা (ফারুকের পরিবার) পয়সাওয়ালা যা পারো নিয়ে নাও।” এ সময় ফারুকের সাথে ভাঙারি সোহেলের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এরপর ফারুকের বাসায় গিয়ে সোহেল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে ফারুকের ছেলে অমির সাথেও সোহেলের বাকবিতণ্ডা হয়। অমির সাথে নিহত হানিফের পরিবারের সুসম্পর্ক রয়েছে। এ ঘটনায় হানিফ, অমির পক্ষ নিয়ে ভাঙারি সোহেলের সাথে কথা কাটাকাটি হলেও পরে মিমাংসা হয়ে যায়।
পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে আমবাগান তরুণ সংঘের মাঠে খেলছিল হানিফ। এসময় ভাঙারি সোহেল অতর্কিতে এসে হানিফকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। খবর পেয়ে হানিফের ছোট ভাই অনিক ছুটে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে সোহেল। পরে দুই পরিবারের লোকজন এসে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এসময় সোহেল, হানিফের মাকেও মারধর করে বলে জানায় পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সোহেল পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন হানিফ ও অনিককে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক হানিফকে মৃত ঘোষণা করেন। ছুরিকাঘাতের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হানিফের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নুরুল আলম আশেক বলেন, ‘বিকেলে আমবাগান থেকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত দুইজনকে হাসপাতালে আনা হলে হানিফ নামের একজনকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষনা করেন। অনিক নামের অপরজন ২৭নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অনিকের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানান তিনি।
খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুজ্জামান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভাঙারি সোহেলের পরিবারের সাথে নিহত হানিফের পরিবারের পূর্ব শত্রুতা ছিল। কয়েকদিন আগে ফারুক সাহেবের সাথে ভাঙারি সোহেলের সাথে কথা কাটাকাটি হলে নিহত হানিফ ফারুক সাহেবদের পক্ষ নেয়। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে আমবাগান তরুণ সংঘের মাঠে খেলার সময় এসে হানিফকে অতর্কিতে ছুরিকাঘাত করে ভাঙারি সোহেল। এসময় ভাইকে রক্ষায় অনিক এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে সোহেল। এর মধ্যে হানিফ নিহত হয়। অনিকের অবস্থাও গুরুতর। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধস্কুল শিক্ষিকা রুমি হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড