রাঙ্গুনিয়ায় নির্বাচন কর্মকর্তা এক মাসের ছুটিতে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম। আগামী এক মাস পর তিনি যোগদান করলে তবেই এনআইডি করা যাবে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে কয়েক শতাধিক প্রবাসী। তারা এনআইডি করতে না পেরে পাসপোর্ট করতে পারছেন না। ভিসার মেয়াদ কম হওয়ায় অধিকাংশ প্রবাসীর বিদেশ যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এদিকে প্রবাসীদের পক্ষে এর সুরাহা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন সরফভাটা ইউপি শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিগত বেশ কয়েক দিন যাবৎ আমার ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য প্রবাসী ভোটার এনআইডি জটিলতার বিষয়টি আমাকে জানান। সোমবার (গতকাল) আমি নিজে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিষটি কর্মরত কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তারা আমাকে জানান যে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পবিত্র হজে গেছেন। তিনি আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন। তিনি না আসা পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়ায় নতুন কেউ এনআইডি করতে পারবেন না। কারণ এনআইডি সার্ভার উনার আঙ্গুলের ফিঙ্গার প্রিন্ট ছাড়া খোলা যায় না।
শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, এমতাবস্থায় বর্তমানে প্রবাসী অধ্যুষিত বৃহত্তর রাঙ্গুনিয়ার কয়েক হাজার বিদেশ ফেরত যুবক এনআইডি করতে পারছেন না। এতে অনেকের ভিসা নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ অনেকের পাসপোর্ট মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারা এনআইডি করতে না পারলে পাসপোর্ট করতে পারবেন না। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার অনুরোধ জানিয়ে প্রবাসী ভাইদের পক্ষে এই আবেদন করছি।
উপজেলার সরফভাটা এলাকার প্রবাসী আবু বক্কর কয়েক মাস আগে দেশ এসেছেন। তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ। তাই নবায়নের জন্য এনআইডি কার্ড প্রয়োজন। গত উপজেলা নির্বাচনের আগে থেকে তিনি ফাইল জমা দেয়ার জন্য নির্বাচন অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনের কারণে কোনো ফাইল নেয়া হচ্ছে না বলে এক মাস ঘুরেছি। এখন বলছে নির্বাচন অফিসার এক মাসের ছুটিতে। তিনি না আসা পর্যন্ত নতুন এনআইডি কার্ড হবে না বলে জানিয়েছেন। এদিকে আমার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। দ্রুত এনআইডি কার্ড হাতে না পেলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে। মরিয়মনগর এলাকার মোহাম্মদ তৌহিদ বলেন, এনআইডি করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়েছি। আগামী ২৫ তারিখ বিদেশ চলে যাওয়ার সময় আমার। কিন্তু এর আগে এনআইডি কার্ড করতে না পারলে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক বছর। এদিকে এটি না থাকায় পাসপোর্ট জঠিলতা, ব্যাংকিং হিসাব খোলাসহ পদে পদে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
এই ব্যাপারে সরেজমিনে নির্বাচন অফিসে গেলে তারা জানান, নির্বাচন কর্মকর্তা ছুটিতে যাওয়ার আগে পেন্ডিং সব ফাইল সাক্ষর করে দিয়েছেন। এখন প্রায় ৭০–৮০ জন মতো প্রবাসীর ফাইল জমা আছে। তাদের টিকেটের মেয়াদ দুই মাসের উপরে। তাই নির্বাচন কর্মকর্তা ছুটিতে গেলেও কোন প্রবাসীর সমস্যা হবে না বলে তারা দাবী করেন। তবে নির্বাচন কর্মকর্তা না থাকলেও নতুন এনআইডি করা ছাড়া সংশোধন, ভোটার ট্রান্সফার, স্বাক্ষরিত ফাইলের ছবি তোলাসহ বাকী সব কাজ চালু রয়েছে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুব বলেন, আমাদের নির্বাচন অফিসার না থাকা পর্যন্ত রাউজানের অফিসারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উনি কয়েকদিন পর যোগদান করবেন। উনি বিশেষ ব্যবস্থায় এনআইডি করাতে পারবেন। এতে এই জঠিলতা আর থাকবে না বলে আশা করি।