‘আর পোয়ারে পোস্টমর্টম ন গইজ্জো, লাশ ফেরত দাও’ (আমার ছেলেকে পোস্টমর্টেম করবেন না, লাশ ফেরত দেন)। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসা ফাতেমা বেগম নামে এক বৃদ্ধা মা তার প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে এভাবে বিলাপ করছিলেন। পাশেই মাটিতে গড়াগড়ি করে কান্নাকাটি করছিলেন তার পুত্রবধূ। গতকাল সোমবার বিকালে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে মর্গে নেয়াকালে মো. সেলিম (৫০) নামে নিহত এক ব্যক্তির স্বজনদের মাঝে এই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি দোহাজারী এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। নগরীতে তিনি খুলশী থানাধীন ওয়ারল্যাস ৪ নম্বর রোডে থাকতেন। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া বলেছেন, সোমবার বেলা আড়াইটায় চমেক হাসপাতাল সংলগ্ন এপিক নামের একটি ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে মো. সেলিম নামে এক ব্যক্তি নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে নিহতের ছোটো ভাই সুমন আজাদীকে জানান, তার বড় ভাই এক মালিকের প্রাইভেট গাড়ি চালাতেন। যে ভবনের ছাদ থেকে তিনি নিচে পড়ে মারা যায় সেটা তার মালিকের ছিল। ছাদে লাগানো ফুল গাছে পানি দেওয়ার সময় নাকি সেখান থেকে পা পিছলে নিচে পড়ে গেছে। তিনি জানান, ছয় ভাইবোনের মধ্যে সেলিম পরিবারের সবার বড় ছিলেন। তার চার সন্তান রয়েছে।
এর আগে ছেলের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে লোহাগাড়া থেকে নিহতের মা, স্ত্রী, ভাই-বোনসহ স্বজনেরা ছুটে আসেন চমেক হাসপাতালে। বিকালে জরুরি বিভাগের সামনে নিহতের স্ত্রী ও তার বয়োবৃদ্ধ মা ফাতেমা বেগমসহ অন্যান্য স্বজনদের আর্তনাদে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।